ন্যাভিগেশন মেনু

জনগণ যাকে খুশি ভোট দিক, নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু হয়: শেখ হাসিনা


আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মনে করি আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এটাই চাই, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিক। কিন্তু নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু হয়। সেটাই আমরা চাই। জনগণের সব রকম সহযোগিতা চাই। 

ভোট অত্যন্ত মূল্যবান উল্লেখ করে সবাইকে কেন্দ্রে যাওয়ার এবং ভোট দেওয়ার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  

রবিবার(৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সবাইকে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, , আশা করি দেশের সকল মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিতে যাবেন। আপনার অধিকার আপনি প্রতিষ্ঠিত করবেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখবেন। যা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এনে দেবে। সুষ্ঠুভাবে ভোট কেন্দ্রে সকলে আসবেন। আপনাদের ভোট অত্যন্ত মূল্যবান। আজকে জনগণ সেই ভোটের অধিকার পেয়েছে। সেটা তারা সুষ্ঠু ভাবে প্রয়োগ করতে পারবে। নির্বাচনটা অবাধ-নিরপেক্ষ হবে।

ভোট দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে করতে পারছি। সেজন্য দেশের মানুষের প্রতি, জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক বাধা ছিল, অনেক বিপত্তি ছিল।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ তাদের ভোট সম্পর্কে সচেতন হয়েছে নির্বাচনটা যে একান্ত ভাবে জরুরি। কারণ ৫ বছর শেষ করার পর একটা নতুন সরকার আসবে। জনগণ তার ইচ্ছেমতো ভোট দেবে। আর সেই ভোট দেওয়ার পরিবেশটা আমরা তৈরি করতে পেরেছি।

জনগণের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সব সময় আত্মবিশ্বাসী, কারণ আমি জানি আমার জনগণ আমার সঙ্গে আছে। ইনশাল্লাহ আমরা জয় লাভ করব। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই। আমাদের জনগণ নৌকার জন্য ভোট দেবে।

তিনি বলেন, আশা করি নৌকা মার্কা জয় লাভ করবে। আবারও আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করব। বাংলাদেশে যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারব। এই বিশ্বাস আমাদের আছে। জনগণের ওপর আমার বিশ্বাস আছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশ স্বাধীন-সার্বভৌম। আমরা ছোট দেশ হতে পারি কিন্তু আমাদের বিপুল জনসংখ্যা আছে। আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কে কি বলল না বলল এটা নিয়ে আমি বদার করি না (মাথা ঘামাই না)। বাংলাদেশ হচ্ছে একটা সার্বভৌম রাষ্ট্র। আর জনগণ আমাদের মূল শক্তি। আর কে কি করবে না করবে সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নাই।  

বিএনপির আন্দোলন জনগণ প্রত্যাখান করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের (বিএনপি) হরতাল তাল হারিয়ে ফেলেছে। কারণ, তাদের হরতালের তালে বাংলাদেশের জনগণ নাচে নাই।

শেখ হাসিনা বলেন, তারা মানুষ হত্যা করে, মানুষ পুড়িয়ে, ট্রেনে আগুন দিয়ে, বাসে আগুন দিয়ে, ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে তারা মনে করে ওটাই তাদের রাজনীতি। এটা করতে যেয়ে জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছে।

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিদেশি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গ্রহণযোগ্যতা কার জন্য? একটা সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য? আমার জবাবদিহিতা জনগণের কাছে। জনগণ এটা গ্রহণ করছে? নাকি করছে না? জনগণ এই নির্বাচনকে গ্রহণ করছে কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আমি পরোয়া করি না সন্ত্রাসী দল কি বলল, না বলল।

বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্বাচন বয়কট প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা কখনও নির্বাচনেই বিশ্বাস করে না। বিএনপি প্রতিষ্ঠা হয়েছে; একটা মিলিটারি ডিকটেটর সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর বিএনপি দল গঠন করেছে।

তিনি বলেন, এরা তো আসলে ভোট কারচুপি, সিল মারা আর মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়া এটাই তাদের চরিত্র এবং সেই সুযোগটা তারা পাচ্ছে না। তাছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো অভিযোগ করতে পারেনি। যে নির্বাচনে বিএনপি জোট ৩০০ আসনের মধ্যে সিট পেয়েছিল মাত্র ৩০টি। আর আওয়ামী লীগ একক ভাবে সিট পেয়েছিল ২৩৩টি। এরপর থেকে বিএনপি নির্বাচনের বিরুদ্ধে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ওদের (বিএনপি) জন্মলগ্ন থেকেই ভোট কারচুপি, সিল মারা, হ্যাঁ-না ভোট, ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এটাই তাদের চরিত্র। সেটা করতে পারবে না বলেই তারা নির্বাচনে আসে না।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।

এর আগে সকাল ৮টার ৩ মিনিটে রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানমন্ডি সুধাসদনের ঠিকানায় ভোটার হওয়ায় তিনি এ কেন্দ্রে ভোট দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলও তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।