ন্যাভিগেশন মেনু

দেশে রোগ কমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি


তামাক ও অন্যান্য ক্ষতিকর জিনিস গ্রহণের কারণে বাংলাদেশে রোগের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সিগারেট কোম্পানিগুলো তরুণ সমাজের স্বাস্থ্যহানি ঘটানোর জন্য নানান মিথ্যাচারের মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য বাজারজাত করছে। কোম্পানিগুলোর মূল উদ্দেশ্য তরুণ সমাজকে নেশায় আসক্ত করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়া

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীল বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) যৌথভাবে “সিগারেট কোম্পানীর নতুন মিথ্যাচার: টার্গেট তরুণ প্রজন্ম” শীর্ষক আলোচনা সভায় আলোচকরা এসব কথা বলেন।

 উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর সমন্বয়কারী অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ও প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা।

 স্বাগত বক্তব্য রাখেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেলের প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মোঃ বজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মাদক নিরোধ সংস্থা (মানস) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: অরুপ রতন চৌধুরী, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নওজিয়া ইয়াসমিন, একটিভ বিডি ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. অনুপম হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা: নিজাম আহমেদ।

বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস (বাংলাদেশ) এর সিনিয়র কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত কুমার সিনহা, স্টপ বাংলাদেশ এর ফোকাল পয়েন্ট ফাহমিদা ইসলাম প্রমূখ।

হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সকল সংগঠনকে সাথে নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে জোরালো দাবি জানানো প্রয়োজন। এছাড়া প্রমাণ সহকারে ই-সিগারেট ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রচার বাড়ানোর পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগনকে এর সাথে সম্পৃক্ত করার বিষয়েও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

 বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়গুলোকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। পরিশেষে তিনি এই কার্যক্রমকে আরো শক্তিশালী করতে চিকিৎসকদেরকে যুক্ত করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার প্রচারণা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

 অধ্যাপক ড. নওজিয়া ইয়াসমিন বলেন, সকল স্তরের মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছানোর আগেই ই-সিগারেট বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসকল গবেষণা প্রচারে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

অধ্যাপক ডা. অনুপম হোসেন বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত নাটক সিনেমায় জনপ্রিয় অভিনেতাদের মাধ্যমে বিনা প্রয়োজনে ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ই-সিগারেট ব্যবহারের দৃশ্যই প্রচার করা হচ্ছে বেশি। পরিশেষে তিনি বিভিন্ন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব, অভিনেতাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরকে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রচারণায় যুক্ত করার আহবান জানান।

অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, ই-সিগারেট অন্যান্য প্রচলিত তামাকজাত দ্রব্যের মতই ক্ষতিকর। সুতরাং, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ নয় বরং সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।