ন্যাভিগেশন মেনু

লুঙ্গি ফুলিয়ে সাগরে টানা ৬ দিন, দেশে ফিরল ইমরান


পরনের লুঙ্গি ফুলিয়ে সাগরে টানা ছয়দিন বেঁচে ছিলো কিশোর ইমরান। আইনি বেড়াজাল ও কূটনৈতিক যোগাযোগের পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছে।

শুক্রবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কাছে তাকে হস্তান্তর করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইমরানের বাবা ও স্বজনরা তাকে বেনাপোল থানার মাধ্যমে গ্রহণ করে। কিশোর ইমরান পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থী ও মডেরখাল এলাকার মো. ইসমাইল খানের ছেলে।

১৪ বছরের কিশোর মো. ইমরান খান জানায়- ‘ছোটবেলায় পুকুরে লুঙ্গি ফুলিয়ে ডাম্বুরা বানিয়ে সাঁতার কাটার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ছয় দিন সাগরে ভেসে ছিল । ভাসতে ভাসতে এক পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের জলসীমায় প্রবেশ করে। সেখানকার মৎস্যজীবীরা তাকে উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গের রায়দিঘি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

রায়দিঘি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়। সেখান থেকে ভোলাহাট থানার নূর আলী মেমোরিয়াল সোসাইটি নামে একটি শিশু যত্ন ও শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে রাখা হয় তাকে। দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত সেখানেই ছিল সে। গত বছরের ২৫ আগস্ট ইমরানের বাবা ইসমাইল খানের মালিকানাধীন এফবি ইমরান নামে ট্রলারটিতে ইমরানসহ ১২ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যায়।

পরদিন ২৬ আগস্ট ভোররাতে সাগর থেকে মাছ শিকার করে ঘাটে ফিরে আসার পথে বলেশ্বর নদের মোহনায় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। এ সময় শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই ট্রলার থেকে সাগরে পড়ে যায় ইমরান। সাগরে ছয় দিন লুঙ্গি ফুলিয়ে ভাসতে ভাসতে ৩১ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের জলসীমা অতিক্রম করে ইমরান।

ওই সময় দেশটির মাছ ধরা ট্রলার এফবি বাবা পঞ্চানন ট্রলারের চালক মনোরঞ্জন দাস তাকে উদ্ধার করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার রায়দিঘি থানায় পৌঁছে দেয়। ইমরানের বাবা ইসমাইল খান জানান, ‘অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ছেলেকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে গত বছরের ৩১ আগস্ট রাতে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম।

ছেলেকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা আয়েশা বেগম। বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বরগুনার জেলা প্রশাসক, ট্রলার মালিক সমিতি, পাথরঘাটা প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সাংবাদিকসহ তার স্বজনরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ইমরানের বেঁচে থাকাকে অলৌকিক এবং দেশে ফেরায় দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের ভালোবাসা বলে অভিহিত করেন।

এস এস