ন্যাভিগেশন মেনু

শুধু পড়ে পাস করলে হবে না, সেটা অর্থবহ হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরের ফলে ইতিবাচক লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা যে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং উদ্যোগ নিয়েছি সেগুলো এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধুমাত্র পড়ে পাস করলে হবে না, সেটা অর্থবহ হতে হবে।

রবিবার (২৬ নভেম্বর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল তুলে দেওয়া হয়। ফলাফল ঘোষণার আগে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেখেছি, এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফল ৬০ দিনে দেওয়ার যে একটা রীতি, সেটা কিন্তু আপনারা অব্যাহত রেখেছেন।  সেটার জন্য আপনাদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের সাক্ষরতার বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা একটা সার্ভে করেছিলাম, আমাদের কোনো কোনো এলাকাতে প্রাইমারি স্কুল ছিল না। কিছু স্কুল করা হয়েছিল এক কামরার। আমরা সেগুলোকে তিন কামরা করে দেই। সারা বাংলাদেশে এখনকার মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না।  দুই মাইলের মধ্যে যদি স্কুল না থাকে, সেখানে স্কুল করার উদ্যোগ আমরাই নিয়েছিলাম।

তিনি বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের যারা হুকুমদাতা ও অর্থদাতা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটাই করে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এখন তো প্রতিনিয়ত অগ্নিসন্ত্রাস করেই যাচ্ছে। ফলে এখন ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো একটা ভীতির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অথচ যতক্ষণ তারা সঠিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে, ততদিন কিন্তু তাদের কোনো অসুবিধা ছিল না। তাতে বিএনপি বা তাদের দলগুলির ভাবমূর্তিও আরও বেড়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার পর এখন জনগণের কাছ থেকে তারা আবার সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ, একজন মানুষ হয়তো অনেক কষ্ট করে একটা বাস তৈরি করে, সেটা থেকে তার জীবন-জীবিকা চলে। সেটা যখন তার চোখের সামনে পুড়ে যায় বা বাসের ভেতরে হেলপার ঘুমিয়ে আছে, সেই অবস্থায় যখন একটা গাড়ি পোড়ায়... যারা এভাবে অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত বা যারা হুকুমদাতা, যারা অর্থদাতা, তদের আমরা কী করবো? তাদের কি ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেব? না, তাদের বিরুদ্ধে আইন্শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কারণ তাদের বিরুদ্ধে যদি আমরা ব্যবস্থা না নেই, তাহলে এই জ্বালাও-পোড়াও তো তারা চালাতেই থাকবে।

সরকার কারও রাজনৈতিক অধিকারে কখনো হস্তক্ষেপ করেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সাল থেকে যারা এই অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পোড়ানো, তিন হাজারের ওপরে তারা মানুষ পুড়িয়েছে। সেখানে প্রায় কয়েক হাজারের মতো মানুষ মারাই গেছে। লঞ্চ, গাড়ি, বাস, ট্রেন—কিছুই বাদ যায়নি। সেই সময় যারা আসামি ছিল তারা পলাতক ছিল। যখন এই বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সমমনা দলগুলি রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছে, তারা বহাল তবিয়তে এসেছে।

তারা যখন শান্তিপূর্ণ সভা করেছে, তখন কোনো বাধা দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু যখনই তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও শুরু করলো, বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর থেকে তাদের যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড—পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা, একটা বীভৎস দৃশ্য যা দেখলে সহ্য করা যায় না। এমনকি শুনলে আপনারা অবাক হবেন যে, রেললাইন কেটে রেখে দিয়েছে যেন বগি পড়ে যায়, ‍দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনা হলে কী হবে, সাধারণ মানুষ রেলে চড়ে, অতি সাধারণ মানুষ, তারা মারা যাবে। তাদের হত্যার জন্য রেললাইন কেটেছে। যা হোক, স্থানীয় জনগণ সচেতন ছিল, তারা সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ জায়গায় জানিয়েছে বলেই কয়েকটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। তারপরও তারা ট্রেন পুড়িয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নারীদের ওপর হামলা করেছে।

‘আমাদের অনেকেই বলে, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হলো। তারা এটা বলে না, এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, পুলিশ হত্যা করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। এখন ডিজিটাল যুগ। সাধারণ মানুষও ছবি তোলে, সঙ্গে ছবি পাওয়া যায় এবং একেবারে চিহ্নিত। যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। মানুষের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, জনগণের সুরক্ষা দিতে, নিরাপত্তা দিতে। সেটাই আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী করে যাচ্ছে এবং সেটাই করা হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এভাবে মানুষকে পোড়াবে, মানুষের সম্পদ নষ্ট করবে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করবে, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। আমি আশা করি এদের অন্তত একটু শুভবুদ্ধির উদয় হবে, এগুলো বন্ধ করবে। আর বন্ধ না করলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমাদের নিতেই হবে, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।