ন্যাভিগেশন মেনু

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল টাইগাররা


শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে ডি/এল মেথডে ১০৩ রানে হারিয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে ২-০ তে সিরিজে জিতলো বাংলাদেশ। এতে প্রথমবারের মত লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উৎসবে টাইগাররা।

মঙ্গলবার (২৫ মে) সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। জবাবে ৩৮ ওভার পর্যন্ত সফরকারীরা ১২৬ রান করে। এরপর বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বন্ধ থাকে প্রায় ৪৫ মিনিট। এরপর ২ ওভারের জন্য মাঠে নামে দুই দল। ২ ওভারের জন্য ডি/এল মেথডে লঙ্কানদের সামনে টার্গেট আসে ১১৯ রানের। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ৪০ ওভার পর্যন্ত ১৪১ রানে থামে শ্রীলঙ্কা। এতে ১০৩ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ

২৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুর ধাক্কা ধীরে ধীরে সামলে উঠছিল শ্রীলঙ্কা। ১ উইকেট হারিয়ে তাদের দলীয় সংগ্রহ ৫০ রান পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ঠিক এমন সময় আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের ১৪তম ওভারের শেষ বলে স্কয়ার কাট করেছিলেন দানুশকা গুনাথিলাকা। কিন্তু বল গিয়ে জমা হয় ডিপ পয়েন্টে থাকা সাকিব আল হাসানের তালুতে। ফলে শেষ হয় লঙ্কান ওপেনারের ৪৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে সাজানো ২৪ রানের ইনিংস।  

শরিফুল ইসলামের পর শ্রীলংকা শিবিরে মোস্তাফিজের আঘাত। ১৪ ওভারে ৫৩ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারাল শ্রীলংকা। মোস্তাফিজের বলে সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন লংকান ওপেনার ধানুশকা গুনাথিলাকা। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৬ বলে ২৪ রান করেন তিনি।

এরপরই সাবিক ফেরান পাথুন নিসানকাকে। থিতু হয়ে যাওয়া নিসানকাকে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। একটু দ্রুত গতিতে করা শর্ট বল পুল করে ওড়াতে চেয়েছিলেন নিসানকা। বাড়তি গতির জন্যই সম্ভবত টাইমিং করতে পারেননি। পিছিয়ে গিয়ে ক্যাচ ধরতে গিয়ে তালগোল প্রায় পাকিয়েই ফেলেছিলেন তামিম ইকবাল। তবে শেষ পর্যন্ত তৃতীয় চেষ্টায় মুঠোয় জমান বল। দুই চারে ৩৬ বলে ২০ রান করেন নিসানকা। এর পরেই শ্রীলংকা শিবিরে আঘাত হানেন মিরাজ। কুসাল মেনডিসকে এলবির ফাদে ফেলেন তিনি। ২২ বলে ১৫ রান করে সাজ ঘরে পেরেন মেনডিস।

এরপর বাংলাদেশের বোলারদের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেনি লঙ্কানরা। এর আগে মিরপুরে অনেক অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলে প্রথমবারের মতো লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পাশাপাশি, আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে ওঠার হাতছানিও রয়েছে লাল সবুজের দলটির সামনে। তবে এজন্য যেভাবে বাংলাদেশের শুরু করা দরকার ছিলো, তা হয়নি। টজে জিতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় সংগ্রহ অর্ধশত হওয়ার আগেই তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও লিটন দাশ বিদায় নেন। এর মধ্যে সাকিব আউট হন শুণ্য রানে। প্রায় দুই বছর পর দলে সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি মোসাদ্দেক সৈকত। প্রতি ম্যাচে  সিনিয়ররাই দায়িত্ব নিয়ে খেলবেন, এটাই যেন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও বিপর্যয়ের মুখে দলের হাল ধরলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জুটি গড়েন ৫৮ রানের। তাতে লড়াকু সংগ্রহের পথে এগুতে থাকে বাংলাদেশ। 

মাহমুদউল্লাহ বিদায় নেয়ার পর রানের চাকা বাড়ানোর দায়িত্ব একাই কাঁধে নেন মুশফিকুর রহিম। একপ্রান্ত আগলে রেখে এগুতে থাকেন শতকের পথে। প্রথম ওয়ানডেতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই কাঙ্খিত শত রানের দেখা পেয়েছেন। দুই দফা বৃষ্টিতে খেলা প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ থাকলেও মুশফিকুর রহিম তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। চামিরার বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পৌঁছে যান শতকের ঘরে। এর মধ্য দিয়ে ১৫ ম্যাচ পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিক। ২০১৯’র বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সবশেষ শতকের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। ১২৫ রানে মুশফিক থামলে, বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৪৬ রানে।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিসাঙ্কা, আশেন বান্দারা, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, লাকশান সান্দাকান, ইসুরু উদানা ও দুশমন্থ চামিরা।

ওআ/