ন্যাভিগেশন মেনু

সরিষাবাড়ীতে জমিসহ ঘর পেয়ে খুশি ৩২০ গৃহহীন


দিগন্ত জুরে সবুজ প্রকৃতির মাঝে উঁকি দিচ্ছে সারি সারি সবুজ ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে গৃহহীন ও ভুমিহীনরা পেয়েছেন তাদের স্বপ্নের বাড়ি, পেয়েছেন বেঁচে থাকার স্বপ্ন। 

মুজিববর্ষে কেউই গৃহ ও ভুমিহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘর ও জমির দলিল পেয়ে খুশি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর ৩২০টি গৃহ ও ভুমিহীন পরিবার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুত্রে জানা যায়, সারাদেশের মতো প্রথম পর্যায়ে এ উপজেলায় ২৯৫টি ঘর বরাদ্দ আসে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আসে ২৫টি ঘর।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নে ৮৪টি, মহাদান ৩০টি, আওনা ১৬৭টি, ভাটারা ১১টি, ডোয়াইল ৯টি, কামরাবাদ ১০টি ও পৌরসভায় তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বিশেষ বরাদ্ধ হিসেবে ৯টি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে দুই শতক জমিসহ একটি স্বপ্নের ঘর। যেখানে দুইটি শয়নকক্ষের পাশাপাশি, রয়েছে রান্নাঘর ও বাথরুম।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সার্বিক তদারকিতে যারা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত তাদেরকে বাছাই করে এলাকাভিত্তিক গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ঘর নির্মাণে অনিয়ম ঠেকাতে আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমেদ সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন। 

সরেজমিনে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চর পোগলদিঘা গুচ্ছগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি রঙ্গিন টিনের আধাপাঁকা ঘর। এসব প্রতিটি ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ এবং সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েলের ব্যবস্থা। 

চর পোগলদিঘা আশ্রয়ন প্রকল্পের বকুল রাণী বলেন, 'আগে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম, আমি মানুষের বাড়িতে ও ইট ভাঙ্গার কাজ করে সংসার চালাই। সরকার আমাকে ঘর দেওয়াতে আমি খুব খুশি।'

রাজেন্দ্র বলেন, 'আমি অটোরিকশা চালাই, আমি কখনো ভাবিনি সরকার আমাকে ঘর বানাইয়া দিবো। এ ঘরটা হওয়াতে খুব উপকার হইছে, থাকা নিয়ে আর চিন্তা করা লাগবে না। এখন আমি আমার জমিতে, আমার নিজের ঘরে থাকি।'

৯০ বছরের বৃদ্ধা তারা রাণী বলেন, 'আমি মেয়ে নিয়ে সরিষাবাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতাম। আমার মেয়ে মানুষের বাড়ীতে কাজ করতো। আমি ভিক্ষে করতাম। সরকার আমাকে ঘর দিবে বা আমি দালান ঘরে থাকবো এটা আমি স্বপ্নেও কোনদিন ভাবিনি। আমি ঘর পেয়ে খুব খুশি। শেখের বেটির জন্য দোয়া করি।' 

ঘর নির্মাণ প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হুমায়ুন কবির বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় উপকরণের সিমেন্ট, ইট-বালু, রড, কাঠ, টিন গুণগত মান শতভাগ বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা প্রতিটি পরিবারের সব সময় খোজ খবর রাখা হচ্ছে। তাদের থাকার কোন অসুবিধা হলে তা তাৎক্ষনিক সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিপন্ন মানুষের আশ্রয় ও আবাসন নিশ্চিত করা, ভুমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমুল, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন করার লক্ষেই আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হয়েছে। এখানে থাকা প্রতিটি পরিবারকে ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দুরীকরণই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য।

এম এ এম/ এস এ/এডিবি/