ন্যাভিগেশন মেনু

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ৬ বছরেও হয়নি রোগীদের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার


সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল জেলার ২৩ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র আশা-ভরসার জায়গা। অথচ এই হাসপাতালে ৬ বছরেও হয়নি রোগীদের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, 'লাখ লাখ মানুষের এই ভরসার জায়গাটি দিন দিন দূর্নীতির আখড়ায় রূপান্তরিত হচ্ছে। এখানে অব্যবস্থাপনার যেনো শেষ নেই। জেলা ও উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালের চিত্র দেখে মনে হয় এ জেলায় দেখার মতো কেউ নেই।'

একই চেহারা জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও।

জানা যায়, অসাধু কিছু অফিস কর্মকর্তা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে ভুয়া প্রত্যয়নকে পুজি করে, ২০১৪ সালের ২ জুন আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন (একই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে লাইসেন্স করা) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ নজরুল ইসলাম। আদালত সেই মামলায় ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের জন্য একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ফলে আর দরপত্র আহ্বান করতে পারেননি সিভিল সার্জন অফিস।

সেই থেকে এক অর্থবছরের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ৬ অর্থবছর রোগীদের খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার বন্ধ রয়েছে অদৃশ্য হাতের ইশারায়। ফলে প্রতিনিয়ত রোগীদের নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ করে অযাচিত বিল তৈরি করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা না থাকায় নিম্নমানের খাবার সরবরাহের হিড়িক পড়েছে হাসপাতালগুলোতে। প্রতিনিয়ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা খাদ্যকষ্টের শিকার হচ্ছেন। রোগী বা রোগীর অভিভাবকরা এসব নিম্নমানের খাবারের অভিযোগ তুললেও ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের।

এদিকে সদর হাসপাতালসহ জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালের দূর্নীতির একই চিত্র দেখা যায়। দেখেও না দেখার ভাব নিয়ে আছে সিভিল সার্জন অফিস। পাল্টাপাল্টি দোষারোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ অফিসের কার্যক্রম।

সচেতন মহলের অভিমত, সরকার জনগনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যেখানে কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দিচ্ছে, সেখানে সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের এত দায়িত্বহীনতার পরিচয় কেনো?

এ প্রসঙ্গে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ নজরুল ইসলাম আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন, 'সবকিছু অফিস জানে। মামলা করেছি আমার প্রত্যয়ন আছে। আর আমি কিছু বলতে পারবো না। যা জানার সিভিল সার্জন অফিস থেকে জেনে নেন। নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহের ব্যাপারটি অফিস ভালো বলতে পারবে।'

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়েত আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন, 'আমি দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পর থেকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য কোর্ট বন্ধ থাকায় আমি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। কোর্ট খুলেছে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যতো দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

দরপত্র আহ্বান ও ফাইলের কথা বললে তিনি বলেন, 'ফাইলটি অনেক খোঁজা হয়েছে কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। অফিসে আগে দায়িত্বে থাকা হিসাবরক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন (দুদকের মামলায় বরখাস্ত) ফাইলটি বুঝিয়ে না দেওয়ার ফলে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। দরপত্র আহ্বান করা হয়নি কারন, আমি জানি মামলা আছে এজন্য। কিন্তু এক অর্থবছরের নিষেধাজ্ঞা তা আমি জানতাম না।'

এমআরএফ/সিবি/এডিবি