ন্যাভিগেশন মেনু

সেরামের টিকা পেতে আশা-দুরাশা


ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের তৈরি টিকা ভারতের বাইরে রপ্তানি করতে পারবে না বলে আজ সোমবার বিবিসি’র বরাত দিয়ে এমন একটি খবর প্রকাশ হবার পর বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কেননা সরকার ভারত থেকে টিকা আমদানি করে বাংলাদেশের মানুষকে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা দিতে উদ্যোগী হযেছেন। সরকারের এমন উদ্যোগে দেশের মানুষও দারুন আশাবাদী। 

বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করেছে। সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পুরো তিন কোটি করোনা প্রতিরোধ টিকা পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬শ কোটি টাকা সেরামের অ্যাকাউন্টে রবিবার জমাও দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সেরাম ইনস্টিটিউট এই মুহূর্তে টিকা রপ্তানি করতে পারছে না। কেননা স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে তবেই রপ্তানির চিন্তা করা যাবে। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনেওয়ালা বলেছেন, আমাদের যে লাইসেন্স রয়েছে সেটি অনুযায়ী, এই মুহূর্তে আমরা রপ্তানি করতে বা খোলা বাজারে বিক্রি করতেও পারবো না। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিড-১৯’এর টিকা কেনার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় চিনের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছে ঢাকা। এবার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ট্রায়াল) নিয়ে চিনা কোম্পানি আনুই জিফেইয়ের দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণের কথা ভাবছে সরকার।

এদিকে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, এই খবরটি তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যম মারফৎ পেয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছ থেকেই জানতে পারি। এরপর ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। মোমেন জানান, আমরা এ নিয়ে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সাথে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে আমাদের টিকা পেতে কোন সমস্যা হবে না বলে আশা করি। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও আশাবাদ করে বলেছেন,যথাসময়ে করোনাভাইরাসের টিকা আসবে। আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার খবর আসার পর বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথার পরিপ্রেক্ষিতে এবং টিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি থাকার কারণে আমরা আশাবাদী, কোনো সমস্যা হবে না। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনার কথা ছিল। 

একই সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ভারতে টিকা রপ্তানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার প্রভাব বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া চুক্তির ওপর পড়বে না। যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে, তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে হওয়া চুক্তি। বাংলাদেশ যে চুক্তি করেছে, সেটা সরকারের সঙ্গে সরকারের। এটা আন্তর্জাতিক চুক্তি। নিষেধাজ্ঞার আওতায় সেটি পড়বে না। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তিন কোটি ডোজ টিকার কথা বলেছেন। সচিব বলেন, সুতরাং, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দুশ্চিন্তারও কিছু নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেতে আরও তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। তাই বাংলাদেশে টিকা আসার যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, সে সময়ই টিকা আসবে। পাশাপাশি বেক্সিমকো বেসরকারিভাবেও ৩০ লাখ টিকা আনবে এবং প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১ হাজার ২০০ টাকা।

এস এস