ন্যাভিগেশন মেনু

জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে চট্টগ্রামে গণপরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়ে জিরো টলারেন্স: জেলা প্রশাসক


চট্টগ্রামের কাপ্তাই সড়কে জেলা প্রশাসন নিরাপত্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর আশ্বাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, সড়কে কোন ধরনের চাঁদাবাজি চলবে না। যত্রতত্র গাড়ি রেখে যাত্রী উঠানো যাবে না। যে বা যারা সড়কে চাঁদাবাজি করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে আমরা কাউকে ছাড় দিবো না। শ্রমিক কল্যাণের জন্য আপনারা যে চাদাঁ নেন, সেটি আপনাদের অফিসেই নেন। যদি গাড়ি থামিয়ে কোন চাঁদাবাজি করা হয় তা কোন ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। চাদাঁবাজি যাতে কেউ করতে না পারে সেটি আমরা দেখবো। যত্রতত্র গাড়ি বন্ধ করা যাবে না।

রোববার (২৮ এপ্রিল)  বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈঠকে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক অনুরোধে আমরা আমাদের চলমান ধর্মঘট স্থগিত করে নিচ্ছি। যদি আমাদের গাড়িতে কোনো রকম হামলার শিকার হয় তাহলে আমরা আমাদের চলমান ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হবো। কাপ্তাই সড়কে গাড়ি চললে চট্টগ্রামের সব সড়কে গাড়ি চলবে।  আমরা সরকারকে বিব্রত করতে চাইনা। আমরা সবমসময় সরকারকে সহযোগিতা করেছি। আমরা গাড়ি চালাবো। আমাদের দাবিগুলো পূরণে আশ্বাস দিয়েছেন।

গাড়ি ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, হামলায় গাড়িগুলো কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি বিআরটিএ দেখবে। এরপর আমরা সেটির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখবো। ক্ষতিপূরণের জন্য মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আমরা কথা বলব। যাতে আপনাদের তিন গাড়ির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে। 

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, দুইজন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার পর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি সেখানে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গাড়িগুলো যাওয়া আসার সময় সামনে পেছনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ স্কোয়াড থাকবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ

এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তীব্র গরমে গাড়ি সংকটের জন্য ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু পিকআপ, সিএনজি, টেম্পোসহ চলেছে কিছু যানবাহন।  

নগরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, গণপরিবহন সংকটের কারণে টেম্পুতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। মুরাদপুর, চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন, নিউমার্কেট, জিইসি, অলঙ্কার মোড়, টাইগারপাসসহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র গরমের মধ্যে গাড়ি না পেয়ে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাত্রীরা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। গণপরিবহন সংকটে পুরোদিনে ভোগান্তিমে পড়েছিল সাধারণ মানুষ।