ন্যাভিগেশন মেনু

আমেরিকা আজ থমকে দাঁড়িয়েছে, চিরনিদ্রায় বাংলাদেশিরাও


বিশ্বের রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক সিটি কখনো নিদ্রা যায় না অর্থাৎ দিন-রাত ২৪ ঘন্টাই সচল থাকে। শত বছরের এই প্রবাদ এই প্রথমবারের মতো মিথ্যায় পর্যবসিত হলো করোনা তাণ্ডবে। 

৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলাও এভাবে থমকে দিতে পারেনি এই সিটিকে। কিন্তু এবার অদৃশ্য এই শক্রুর আক্রমণে গোটা সিটিই শুধু নয় আমেরিকার অর্ধেকের বেশী মানুষের জীবন-যাত্রা থমকে দাঁড়িয়েছে। 

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই হাজারো আমেরিকান হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসা-সামগ্রির সংকট দেখা দেয়ায় বিশ্বে সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমসতাধর রাষ্ট্রের নাগরিকেরাও আজ হতাশ। গত ১৯ মার্চ নিউইয়র্কসহ বড় বড় রাজ্যগুলোর অধিবাসীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এরপর ক্যালিফোর্নিয়া, সিয়াটল, মিশিগান, ইলিনয়, ওরেগণ, টেক্সাস, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, জর্জিয়া প্রভৃতি রাজ্যের ১৯ কোটি ৮০ লাখ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি হয়েছে।  সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে খাদ্য-ওষুধ-জরুরী পণ্য ক্রয়ের সময়। 

অর্থাৎ একজন থেকে আরেকজনকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা চেম্বারে থাকলেও রোগীর ভেতরে প্রবেশের অনুমতি নেই। বাইরে দাঁড়িয়ে সমস্যার কথা বললে প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে দেয়া হয় ফার্মেসিতে। এসব করা হচ্ছে করোনা রোগীর বাইরে। 

যারা করোনায় আক্রান্ত বলে মনে করা হয় তাদেরকে নিকটস্থ টেস্টিং সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। রেস্টুৃরেন্ট খোলা রাখার অনুমতি রয়েছে শুধুমাত্র টেক আউটের জন্যে। বার, থিয়েটার, ক্যাসিনো বন্ধ। প্রমোদ তরী ছিন্নভিন্ন। সকল স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। কর্মচারিদেরকে ঘরে বসে অনলাইনে কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

এ ধরনের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের সুফল শিগগিরই আসবে বলে আশা করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে প্রেস ব্রিফিংকালে সামাজিক দূরত্ব প্রসঙ্গে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, কিসিং, হাগিং এবং করমর্দনের দৃশ্য এখন আর চোখেই পড়ে না। এটি খুবই একটি ভাল দিক। স্বাস্থ্যসম্মত বটে। 

এদিকে, ইস্টার সানডে অর্থাৎ ১২ এপ্রিল সবকিছু খুলে দেয়ার যে আভাস তিনি দিয়েছিলেন, তীব্র সমালোচনার মুখে সর্বশেষ ব্রিফিংয়ে কিছুটা নমনীয়ভাব দেখিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, আমেরিকা বন্ধ থাকলে সবকিছু তছনছ হয়ে যাবে। এটা আমি চাই না। আমেরিকা সচল থাকবে সবসময়-এটাই এ জাতির অঙ্গীকার।

এদিকে,  নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে কমপক্ষে ১৫ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলে ২৭ মার্চ প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে। এরমধ্যে রয়েছেন জ্যাকসন হাইটস মসজিদের মোয়াজ্জিন লিটন, ব্যবসায়ী সূর্য বণিক, গৃহবধূ আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা হাওলাদার, এম এ বাতেন, রোহেনা আকতার, এটিএম সালাম প্রমুখ। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন সাংবাদিক ফরিদ আলম, বিএনপি নেতা খালেক আকন্দ, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার জাহিদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাইদ মইনুল প্রমুখ।

এস এস 

আরো পড়ুন: