কলকাতায় উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে সাম্প্রতিককালে পশ্চিমবঙ্গবাসী তথা বাংলাদেশের মানুষ ছুটতেন দক্ষিণ ভারত মুম্বই, চেন্নাই, ভেলোর, ব্যাঙ্গালোর। এতে করে পশ্চিমবঙ্গবাসী অর্থনৈতিকভাবে মার খেতে থাকে।
এ অবস্থা কাটাতে এবার কলকাতাতেই হচ্ছে হেলথ হাব। উন্নতমানের চিকিৎসা সেবার জন্য অনেক সময়ই রোগীকে নিয়ে যেতে হয় দক্ষিণ ভারতে। পশ্চিম তথা গোটা দেশের বহু মানুষ দক্ষিণের উন্নত চিকিৎসাতেই ভরসা রাখেন।
কিন্তু এবার আর তা প্রয়োজন হবে না। কারণ এবার ন্যূনতম খরচে রোগীদের সেরা পরিষেবা দিতে তৈরি হচ্ছে কলকাতা। এ শহরের বুকেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গড়ে উঠতে চলেছে অত্যাধুনিক হেল্থ হাব বা স্বাস্থ্য নগরী। একই ছাদের নিচে মিলবে সমস্ত ধরণের চিকিৎসা পরিষেবা।
বুধবার স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম কুমার মুখোপাধ্যায় নতুন এই উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, হেলথ হাবের কনসেপ্ট পেপার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আরজি কর হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের বিশেষজ্ঞ ডা. সুগত দাশগুপ্তকে।
তিনি সাত বছর অস্ট্রেলিয়ায় কাটিয়েছেন। উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার উপরই ভরসা রাখতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। আগামী একমাসের মধ্যেই কনসেপ্ট পেপার জমা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। সেটি দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সংকেত দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। স্বাস্থ্য নগরীটি সরকারি নাকি বেসরকারি হবে, সে সিদ্ধান্তও নেবেন মুখ্যমন্ত্রীই।
স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যানের কথায়, “হাজার হাজার রোগীকে চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারত যেতে হয়। তবে এবার বেঙ্গালুরু থেকেই রোগী এখানে আসবে। ট্রমা কেয়ার থেকে ওষুধের দোকান- সব পরিষেবা পাবেন রোগীরা। তাও আবার ন্যূনতম খরচে।” প্রথমে ৫০০ বেডের ব্যবস্থা থাকবে এখানে।
এক বছরের মধ্যে তা এক হাজার করাই হবে লক্ষ্য। সূত্রের খবর, পাঁচতলা বিল্ডিংটি রাজারহাট-নিউটাউনেই তৈরি হবে। তবে কোনও রোগী এখানে সরাসরি ভরতি হতে পারবেন না। শুধুমাত্র অন্য হাসপাতাল থেকে রেফার করা রোগীরই চিকিৎসা হবে এখানে। অর্থাৎ ক্রিটিক্যাল রোগীদের সুস্থ করে তোলার লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে হেল্থ হাব।
কোভিড আবহে বাড়ি বসেই সরকারি হাসপাতালে ভরতি রোগীদের পরিবার দু’ঘণ্টা অন্তর রোগীর খবর নিতে পারেন অনলাইনে। এবার এই পরিষেবা বেসরকারি হাসপাতালে মিলবে বলে জানান স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান। বলেন, এর জন্য একটি কলসেন্টার চালু করা হবে। যেখানকার নম্বর থাকবে রোগীর পরিবারের কাছে। হাসপাতাল ও বেডের নাম বললেই রোগীর খোঁজ নেওয়া যাবে।
সিবি/এস এস