ন্যাভিগেশন মেনু

জীবননগরে মাঠে বোরো ধান কাটার মহোৎসব


চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। একদিকে আধুুনিক মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে অন্যদিকে শ্রমিক দিয়ে হাতে করেও ধান কাটা এবং গোছানোর কাজ চলছে।

কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে মাঠের ৭০ ভাগ ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছে। বাকী ধান ১০ দিনের ভেতর কেটে গোছানো সম্ভব হবে। কৃষকরা বলছেন, এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩২ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে। সে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে জেলার চার উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৪৬ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৬ হাজার ১৩০ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ১০ হাজার ১৭২ হেক্টর, জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ৯৮০ হেক্টর এবং আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে রোবো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৩ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে।

কৃষকদের ঠিক মতো পরিচর্যা সেচ, সার এবং চলতি মৌসুমে প্রকৃতিক কোনো দূর্যোগ না হওয়ায় এ বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা, মাড়াই এবং উৎপাদিত ধান ঘরে তোলার কাজে।

ধান কাটার ভরা মৌসুমে শ্রমিকের মজুরি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৫০ টাকার শ্রমিক এখন ৫০০ টাকা নিচ্ছে। এর পরও প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে ধানকাটা ও মাড়াই চলছে। ধান বাড়ি এনে মাড়াই করে সোনার ফসল ঘরে তুলছে কৃষকরা। উপজেলার যে মাঠেই তাকানো যায় সে মাঠেই এখন ধানকাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে কৃষকদের।

চলতি বছরে বোরো আবাদে সেচ সুবিধার কোনো ঘাটতি ছিলো না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ছিলো পুরো মৌসুম জুড়ে। চলতি মৌসুমে উপজেলার কৃষকরা ধানের পাশাপাশি গোখাদ্য হিসেবে বিচালির উপরও এবার গুরুত্ব দিচ্ছেন।

জীবননগর উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান টোকন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে একবিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। এ পর্যন্ত আমার ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর এক সপ্তাহ পর জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবো। 

রায়পুর গ্রামের কৃষক তাহাজ্জত হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে আমার ৭ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ আছে। ইতোমধ্যে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছি। বিঘাপ্রতি আমার খরচ হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে বৃষ্টির পানি না হওয়ায় খরচ একটু বেশি হয়েছে। তবে ক্ষেতের ধান খুব ভালো হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন হবে। মাঠে গিয়ে ধান দেখলে মন জুড়িয়ে যায়।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এ মৌসুমে বোরো আবাদ ভালো হয়েছে। বোরো ধান কাটা শুরু করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা এ মাড়াই শেষ হবে। 

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় কিছু কিছু স্থানে ধান কাটার আধুনিক যন্ত্রের (কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার) মাধ্যমেও ধান কাটা ও মাড়াই করা হচ্ছে। যার ফলে শ্রমিক সংকটের ঘাটতি পূরণসহ খরচ কম হবে বোরো চাষিদের।

এসকে/এডিবি/