নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুরে হীরাপুর গ্রামে অস্ত্রের মুখে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের পর ভাইরালের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার গণধর্ষণ এবং অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমানে ওই ছাত্রী দু’ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর ওই তরুণীকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আজও ফিরে আসেনি এমনটাই অভিযোগ করেছেন তরুণীর মা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একই এলাকার রাসেল (২৫) জোবায়ের (২৪) সাইফুল ইসলাম ইমন (২২) এবং ফয়সাল নামে ৪ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর মা।
মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার রাতেই বেগমগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিখোজ তরুণীর মা সাংবাদিকদের জানান, ‘২০১৮ সাল থেকে একই এলাকার ইমন, রাসেল আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে। এ বিষয়ে তাদের ডেকে এনে নিষেধ করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ‘তাদের কথায় রাজি না হলে তোর মাকে মেরে ফেলবো বলে হুমকি দেয়।’
এরপর একদিন রাসেল ও ইমন আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে কৌশলে কোমলপানীয়র সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমাকে অচেতন করে অস্ত্রের মুখে মেয়েকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে এক দোকানীকে ডেকে এনে জোর করে তার মেয়ের সঙ্গে দাড় করিয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।
ওই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং একাধিকবার তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। বাধ্য হয়ে মেয়ে বিয়ে দিয়েও রেহাই পায়নি। বিয়ের পরে মেয়ে বেড়াতে আসলে তাকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়। উঠিয়ে নেওয়ার ৩ মাস পরে রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিরপুরের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে আনি। এ ঘটনার ১৫ দিন পর রাসেল পুনরায় মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়, ১০ দিন পর আবারও ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ে নিয়ে আসি।
এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর রাসেল আবার আমার মেয়েকে নিয়ে যায়, এখনো সে কোথায় আছে, কিভাবে আছে জানিনা। গত সপ্তাহে রাসেল প্রস্তাব দিয়েছে এবার ১ লাখ টাকা দিতে। টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা মুখ খোলেনি। এবার থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পায়নি। বর্তমানে তারা অসহায় হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাহায্যে পুনরায় আইনের আশ্রয় নিয়েছে।
এ বিষয়ে আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, ‘অভিযুক্ত সবাই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে ওই মেয়ের বিষয়ে আমি কিছুই শুনিনি তবে পূর্বের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতাম।’
বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান শিকদার জানান, ‘রাতেই ইমন ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার ও ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ডি এ/এমআইআর/এডিবি