ন্যাভিগেশন মেনু

মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় ল্যাব চালু করবে চসিক


মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণার জন্য গবেষণাগার চালুর ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: রেজাউল করিম চৌধুরী। এই বছরের এপ্রিলে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ের ৮ম তলা  পরীক্ষাগারটি চালু করা হবে।৷ 

শনিবার দুপুরে মশা কমাতে মহেশখাল পরিস্কার করার মাধ্যমে ক্রাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র৷ আসন্ন বর্ষা মৌসুম আসার আগে পর্যন্ত এ ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে৷ এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হালিশহরের ফইল্যাতলী বাজার সংলগ্ন মহেশখালে মূল কার্যক্রম শুরু হয়৷  এসময় কালো তেল, নাফতা মিশ্রিত মাস্কুবান ও লার্ভিসাইড মহেশ খালে ছিটানো হয়৷ পরে কচুরিপানা অপসারণ ও ফগার মেশিনের মাধ্যমে এডাল্টিসাইড প্রয়োগ করা হয়৷ প্রোগ্রামে প্রায় দেড়শজন স্প্রেম্যান, ফগার অপারেটর, পরিচ্ছন্নকর্মী অংশ নেয়৷ 

চসিক মেয়র বলেন, ৪১টি ওয়ার্ডেই নিয়মমাফিক মশা ঔষধ ছিটানোর পরও দেখা যাচ্ছে হালিশহরসহ কয়েকটি ওয়ার্ডে মশা কমছেনা। অথচ একই ঔষধে অন্যান্য এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে আছে৷ এতে ধারণা করছি বিদ্যমান ঔষধের প্রতি কিছু প্রজাতির মশার হয়তো প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার জীবনচক্রও যাচ্ছে বদলে। মশা নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞানভিত্তিক উপায় জানতে এপ্রিলের মধ্যে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ের ৮ম তলায় মশা নিয়ে গবেষণার জন্য পরীক্ষাগারটি চালু করা হবে৷ আমরা প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখব কোন ধরনের ঔষধ কোন ধরনের মশার জন্য কার্যকর৷ এরপর গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক ঔষধ ছিটানো এবং কার্যক্রম গ্রহণ করবো।

মশা কমাতে কাউন্সিলরদের ভূমিকা রাখা দরকার মন্তব্য করে মেয়র বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে কাউন্সিলররা তদারকি করছেন৷ তবে সামনে যেহেতু ডেঙ্গুর মৌসুম তাই মশা নিয়ন্ত্রণে কাউন্সিলরদের আরো বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে৷ কারণ, সচেতনতা ও মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে কাউন্সিলরদের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ 

মশা নিয়ন্ত্রণে  জনসচেতনতা  জরুরি মন্তব্য করে মেয়র বলেন,  আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি গবেষণাদল গঠন করি। উনাদের বিজ্ঞানভিত্তিক পরামর্শের আলোকে বর্তমানে সর্বাধুনিক মশার ঔষুধ ছেটানো হচ্ছে। আমাদের কাছে মশা ঔষুধের পর্যাপ্ত মজুদও আছে৷ 

তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে চাই জনসচেতনতা। কেবল ঔষধ ছিটিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভবনা যদিনা আমরা নিজেদের বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানি অপসারণ না করি। নাগররিকদের প্রতি আহবান  যাতে তারা প্রতি তিনদিনে একদিন বাসায় জমে থাকা পানি অপসারণের মাধ্যমে মশার প্রজননের সুযোগ কমান।”

মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, নালা-খালে জমে থাকা পানি মশার গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র। এজন্য প্রতিদিন বিভিন্ন নালা-খাল পরিস্কার করছি আমরা৷ এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ মহেশখাল পরিস্কার করছি৷ নালা-খালে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ থাকলে জলাবদ্ধতা হবেনা, যা মশা কমাতে সহায়ক৷ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করায় এক সপ্তাহের মধ্যে মশার প্রকোপ কমবে বলে আশা করছি৷  

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. ইসমাইল, মো. ইলিয়াছ, আবদুল মান্নান, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম,  তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম,  ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি, জোন কর্মকর্তা আলী আকবর।