ন্যাভিগেশন মেনু

৯২৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা মেয়র আরিফুর হক চৌধুরী


সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) শেষ মেয়র হিসেবে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯২৫ কোটি ৪ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সে সময় তাকে কিছুটা আবেগ-আপ্লুত দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় দক্ষিণ সুরমার কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে সিসিক মেয়র এ বাজেট ঘোষণা করেন। তিনি বলেন- মহানগরবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবার সর্বমোট ৯২৫ কোটি ৪ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা আয় ও সমপরিমাণ টাকা ব্যয় ধরে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।

বাজেটে উল্লেখিত আয়ের উৎস গুলো হচ্ছে- হোল্ডিং ট্যাক্স ৪৮ কোটি ৩৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা, স্থাবর সম্পত্তি ইতান্তরের উপর কর ২৫ কোটি টাকা, ইমারত নির্মাণ ও পুনঃ নির্মাণের উপর কর ২ দুই কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, ট্রড লাইসেন্স ১০ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা, বিজ্ঞাপনের উপর কর ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন মার্কেটের দোকান গ্রহিতার নাম পরিবর্তনের ফি ও নবায়ন ফিস বাবদ ৮০ লক্ষ টাকা, ঠিকাদারী তালিকাভুক্তি ও নবায়ন ফিস বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা, ল্যাব টেষ্ট ফি বাবদ ৬০ লক্ষ টাকা, বাস টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ২ কোটি টাকা ট্রাক টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ৫০ লক্ষ টাকা, খেয়াঘাট ইজারা বাবদ ২০ লক্ষ টাকা, সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি ও দোকান ভাড়া বাবদ ৫ কোটি টাকা, রোড রোলার ভাড়া বাবদ আয় ৫০ লক্ষ টাকা, রাস্তা কাটার ক্ষতিপূরণ বাবদ আয় ৩০ লক্ষ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে আয় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, 

দক্ষিণ সুরমায় জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্কের টিকিট বিক্রয় থেকে আয় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকাসহ রাজস্ব হিসাব উপাংশ ১ এ মোট ১০৫ কোটি ১২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা এবং পানির সংযোগ লাইনের মাসিক চার্জ বাবদ ৭ কোটি টাকা, পানির পাইনের সংযোগ ও পুনঃসংযোগ ফি বাবদ ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা, নলকূল স্থাপনের অনুমোদন ও নবায়ন ফি বাবদ ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকাসহ রাজস্ব হিসাব উপাংশ ২ এ মোট ১৮ কোটি ২৭ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা। নগরবাসীর নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যন্য বকেয়া পাওনা পরিশোধ করলে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব খাতে সর্বমোট ১২৩ কোটি ৪০ লক্ষ ১১ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করছি। বাজেটে সিলেট সিটি কর্পোরেশন, নন-ডিপিপি এবং ডিপিপি সরকারি অর্থায়নে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন খাতে প্রাপ্তি ৫২৬ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা এবং নিজস্ব মার্কেট নির্মাণ খাতে ৩৭ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।

বাজেটে তুলে ধরা ব্যয়ের খাতগুলো হচ্ছে- এবারের বাজেটে রাজস্ব খাতে সর্বমোট ১১২ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। তার মধ্যে সাধারণ সংস্থাপন খাতে ৫২ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা, শিক্ষা খাতে ব্যয় ৪ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা, পরিচ্ছন্নতা খাতে ব্যয় ১৯ কোটি ৬০ টাকা, বিদ্যুৎ প্রকৌশল/ সড়ক বাতি খাতে বায় ৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন খাতে ব্যয় ৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, বিবিধ ৭ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা, তার মধ্যে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোষ খাতে ৫০ লক্ষ টাকা, বৃক্ষরোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৪৫ লক্ষ টাকা, মোকদ্দমা ফি ও পরিচালনা ব্যয় বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা, জাতীয় দিবস উদযাপন খাতে ৯০ টাকা, নাগরিক সংবর্ধনা ও আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ ৮০ লক্ষ টাকা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি খাতে ১৫ লক্ষ টাকা, মেয়র কাপ ক্রিকেট, ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্ট ব্যয় বরাদ্দ ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা, রিলিফ / জরুরী ত্রাণ ব্যয় বরাদ্দ ২ কোটি টাকা, আকস্মিক দুর্যোগ / বিপর্যয় করোনা ব্যয় বরাদ্দ ২ কোটি টাকা, কার্যালয় ভবন ভাড়া বাবদ বরাদ্দ ১ কোটি টাকা, নিরাপত্তা/ সিকিউরিটি পুলিশিং ব্যয় খাতে ৯০ লক্ষ টাকা, ডিজিটাল মেলা আয়োজনে ব্যয় বরাদ্দ ২০ লক্ষ টাকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া পানি সরবরাহ শাখার সংস্থাপন ব্যয় সহ পানির লাইনের সংযোগ ব্যয়, পাম্প হাউজ, মেশিন পাইপ লাইন মেরামত সংস্কার ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ মোট ১৮ কোটি ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেটে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে রাজস্ব খাতে ব্যয় বাবদ মোট ৩৩ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তার মধ্যে রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা মেরামত/সংস্কার, বীজ/কালভার্ড নির্মাণ, ব্রীজ/কালভার্ড মেরামত সংস্কার, ড্রেইন নির্মাণ/মেরামত, সরঞ্জাম যন্ত্রপাতি ও সম্পদ ক্রয়, সিটি কর্পোরেশনের ভবন নির্মাণ/ মেরামত, সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব স্টাফ কোয়াটার নির্মাণ ও সংস্কার, ঢাকায় সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব লিয়াজো অফিসের জন্য ফ্ল্যাট করা, কসাই খানা নির্মাণ/ময়লা আবর্জনা ফেলার জায়গা উন্নয়ন, সিটি কর্পোরেশনের পাঠাগার নির্মাণ, সিটি কর্পোরেশনের যানবাহন রক্ষনাবেক্ষনে ওয়ার্কাপ নির্মাণ, হাট বাজার উন্নয়ন, বাস টার্মিনাল সংস্কার ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পাঠাগার নির্মাণ, নাগরিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গভীর নলকূপ স্থাপন, এমজিএসপি প্রকল্পের রক্ষনাবেক্ষন কাজের নিজস্ব অর্থ ব্যয়, সিটি কর্পোরেশনের জন্য জীপ গাড়ী ও ২টি আধুনিক এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় এবং নারীদের উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ ব্যয়সহ ইত্যাদি ব্যয় উল্লেখযোগ্য। 

নন-ডিপিসি, ডিপিপি সরকারি অর্থায়নে এবং উন্নয়ন অংশীদার অর্থায়িত প্রকল্প সমূহের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন খাতে ৫২৯ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। 

সরকারি উন্নয়ন সহায়তা থেকে বরাদ্দ খাতে ১০ কোটি টাকা, কোবিড-১৯ মোকাবেলা, ডেঙ্গু মোকাবেলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচার উপ-খাত সহ সরকারি বিশেষ মঞ্জুরী খাতে ৩৪ কোটি টাকা, সিলেট মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প খাতে ১৮৫ কোটি ১২ লক্ষ টাকা, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় সিলেট মহানগরীর ক্ষতিগ্রস্থ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ৪৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা, হযরত শাহজালাল (রহঃ) মাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা এবং হযরত শাহপরান (রহঃ) মাজার উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্প খাতে ২৮ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা, নগর ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্প খাতে ১১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা, দক্ষিণ সুরমার জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্কে।