ন্যাভিগেশন মেনু

আলমডাঙ্গায় স্বর্ণ চোরাচালান: ৯ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার ৪


চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আড়াই কেজি স্বর্ণালঙ্কার জব্দের ঘটনায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে দর্শনার অনেকেই গা  ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৪ জন।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন, দর্শনা পৌর এলাকার শ্যামপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ বাপ্পী (৩০), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার রিপন হোসেনের ছেলে সম্রাট হোসেন (২১) ও মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার জালালপুর গ্রামের বাবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদার (৩৫) ও দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো - শ্যামপুর গ্রামের নাহিদ, জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের ইউপি সদস্য মাহাতাব উদ্দীনের ছেলে ফয়সাল মাহাতাব মানিক এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলার হিংগাপাড়ার ভবেশ ওরফে তপন হালদারসহ আরও তিনজন।

গত বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেল ৩টার সময় চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বন্ডবিল নামক স্থানে স্বর্ণ চোরাচালানবিরোধী যৌথ অভিযান চালায় চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা থেকে ধাওয়া করে প্রাইভেটকার ও আড়াই কেজি সোনার গহনাসহ আটক করা হয় দর্শনা পৌর এলাকার শ্যামপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ বাপ্পী (৩০), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার রিপন হোসেনের ছেলে সম্রাট হোসেন (২১) ও মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার জালালপুর গ্রামের বাবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদারকে (৩৫)।

পুলিশ জানায়, আটকরা আন্তঃজেলা সোনা চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। ভারত সীমান্তবর্তী দর্শনা থেকে সোনার একটি বড় চালান প্রাইভেটকারে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছে এমন গোপন সূত্রে জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানের নেতৃত্বে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে পুলিশের একটি দল (ঢাকা মেট্রো-গ ১৭-৮৩৩২) প্রাইভেটকারটি ধাওয়া করে। এদিকে সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার ওসি আলমগীর কবীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি আলম নূরকে সাথে নিয়ে পুলিশের আরও একটি টিম নিয়ে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের বন্ডবিল এলাকায় পৌর সীমানা গেটের সামনে অবস্থান নেয়। 

বিকেল ৩টা প্রাইভেটকারটির গতিরোধ করে পুলিশ। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশি চালিয়ে চালকের সিটের পেছনে মোটা কাগজে স্কচটেপ মোড়ানো ৬টি বান্ডিলের ভেতর থেকে স্বর্ণের বালা, নেকলেস, আংটি, কানের দুলসহ বিভিন্ন ধরণের স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা তিনজনকে আটকসহ জব্দ করা হয় প্রাাইভেটকারটি।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় উদ্ধারকৃত সোনার গয়নার ওজন ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম। ২২ ক্যারেট সোনা দিয়ে প্রস্তুত উদ্ধারকৃত স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পায় পুলিশ। 

চালক বাপ্পি পুলিশকে জানায়, ভারতের কলকাতার বিজন হালদারের স্বর্ণালঙ্কার দামুড়হুদার পুড়োপাড়া সীমান্ত থেকে তিনি ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঢাকার কল্যাণপুর থেকে ভবেশ নামক এক ব্যক্তি তা গ্রহণ করতেন। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে জীবননগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জনের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। 

এদিকে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়েছে দর্শনাসহ আশেপাশের এলাকায়। এলাকার চিহ্নিত সোনা চোরাকারবারিরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছে বলে জানা গেছে। মামলায় ৯ জনের নাম থাকলেও এলাকা ছেড়েছে অনেকেই।

এসকে/সিবি/এডিবি/