ন্যাভিগেশন মেনু

ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে উপনির্বাচনে প্রচারণা, থানায় মামলা


দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের প্রচারণায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে রবিউল ইসলাম সোহাগ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

নিজেকে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং উপনির্বাচনে দল থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছিলেন রবিউল ইসলাম সোহাগ। স্বাক্ষর জালিয়াতি করায় তার নামে কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) কোতোয়ালি থানায় এই মামলা দায়ের করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আজিজুল ইমাম চৌধুরী আওয়ামী লীগের দিনাজপুর জেলা শাখায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ কাউন্সিল ২০১২ সালে দলীয় কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

রবিউল ইসলাম সোহাগ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অধীনে দিনাজপুরে এম.এল.এস.এস পদে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক চাকরি করতেন।

রবিউল পরিকল্পিতভাবে অন্যান্যদের সঙ্গে যোগসাজশে শ্রেণি সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রতি জনমনে বিদ্বেষ সৃষ্টির জন্য এবং দলটির সামাজিক রাজনৈতিক ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা, মানহানিকর ও প্রতারণামূলক তথ্যের ভিত্তিতে জাল প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয় সম্পাদক দাবি করে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন ও প্রচার প্রচারণা করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এর আগে গত ৭ অক্টোবর রবিউল ইসলাম সোহাগ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জাল করে এবং আওয়ামী লীগের দলীয় ভুয়া প্যাড তৈরি করে জাল সিল ব্যবহার করে প্রচারণা চালান।

প্রচারণায় রবিউল দাবি করেন, সদ্যপ্রয়াত জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাব্বিরুল আহসান ছবির স্থলে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে রবিউল গত ৭ অক্টোবর দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নিজেকে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন।

আজিজুল ইমাম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা স্বাক্ষর করেননি। আসামি রবিউল ইসলামকে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদে নিয়োগ বা পদস্থ করেন নাই।’

এসব বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার রবিউল ইসলাম সোহাগের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি কোনো ধরনের সাড়া দেননি।

এ দিকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা ফয়সাল আজিজ চঞ্চলকে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও প্রবীণ নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই মিথ্যাচার ও ভুয়া স্বাক্ষরযুক্ত কাগজপত্র কার মাধ্যমে পেল, কোথা থেকে নিল এবং কারা কারা সহযোগিতা করেছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, রবিউলকে আইনের আওতায় এনে কাকে কত টাকা দিয়েছে, দিনাজপুরে কোন নেতার অধীনে সে এই কাজগুলো করেছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা দলকে বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে ও সোহাগের সহযোগী হিসেবে যারা আছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।’

কোতোয়ালি থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মাহবুবুর রহমানকে। মামলার তদন্ত কার্যক্রমও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। স্বাক্ষর ও সিল ভুয়া প্রমাণিত হলে আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ওআ/