কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং-কে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের হাল ধরার অনুরোধ জানানো হয়।
গত নির্বাচনে কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলি জয়ী না হওয়ায় বাংলাদেশ ককাস অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস-ব্রঙ্কস এলাকার ডেমক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেসম্যান ক্রাউলি।
চেয়ারম্যানের পদ শুন্য হবার কারণে ককাসের সাংগঠনিক স্থবিরতা চরমে উঠেছে। এরফলে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের পক্ষে তথা বাংলাদেশের যে কোন ইস্যুতে কংগ্রেসে সোচ্চার হবার কেউ নেই।
এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিং-জ্যামাইকা এলাকার বাংলাদেশী-আমেরিকানদের সমর্থনে বারবার নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান (ডেমক্র্যাট) গ্রেস মেং এর বিকল্প নেই বলে প্রবাসীরা মনে করছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি ) বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমক্র্যাটিক লীগের এক প্রতিনিধি দল এই কংগ্রেসওম্যানের সাথে সাক্ষাত করেন । ডেমক্র্যাটিক লীগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকারের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি আতাউল গণি আসাদ এবং প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
২০১৩ সাল থেকেই গ্রেস মেং, কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের সদস্যা। ইতোপূর্বে বেশ কিছু ইস্যুতে তিনি জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সারা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের জন্যে গত কয়েক বছর ধরেই কংগ্রেসে বিল উত্থাপন করছেন তিনি।এছাড়াও গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমস্যার সময়েও পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এসব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ককাসের নেতৃত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানালে কংগ্রেসওম্যান বলেন, বাংলাদেশীদের যে কোন ব্যাপারে আমি তো সবসময়ই সোচ্চার রয়েছি । এর বাইরে চেয়ারম্যানশিপ নিতে হলে কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলসির সাথে আলাপ করতে হবে। তিনি সম্মতি দিলে এ দায়িত্ব নিতে কালক্ষেপন করবো না। কংগ্রেসে উভয় দলের ৩৪ জন সদস্য ছিলেন এই ককাসে।
এ সময় প্রতিনিধি দলের নেতা খোরশেদ খন্দকার তাকে বলেন যে, রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী নিষ্পত্তির জন্যে কংগ্রেসের জোরালো ভূমিকার বিকল্প নেই।
১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরনার্থীর ভারে বাংলাদেশ জর্জরিত। এ অবস্থার দ্রুত্ব সমাধান করা সম্ভব না হলে আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতি বিপন্ন হবার আশংকা রয়েছে।
কংগ্রেসওম্যান জানান যে, রোহিঙ্গাদের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র অর্থ-সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। মানবিক কারণে আমরা সকলেই সজাগ রয়েছি। গ্রেস মেং এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিরাট এই জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দেয়ার জন্যে।
রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি বসতভিটা ছাড়তে কেন তারা বাধ্য হয়েছেন সে সব ধারাবিবরণী জানতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানো হয় হাউজে এপ্রোপ্রিয়েশন (বাজেট বরাদ্দ) কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গ্রেস মেং-কে।
আরো কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে ডেমক্র্যাটিক পার্টির একটি টিম গঠন এবং তাদেরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্র জানান খোরশেদ খন্দকার। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অন্যতম এবং বর্তমানে কংগ্রেসের নিরপেক্ষ্ সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রহমান (স্টেট সিনেটর-জর্জিয়া) ইতোমধ্যেই এ নিয়ে কথা বলেছেন গ্রেস মেং-এর সাথে।
এছাড়াও, গ্রেস মেং হচ্ছেন ডেমক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারপার্সন।
সিবি / এস এস
