ন্যাভিগেশন মেনু

কান্দাহার দখলের দাবি তালেবানের


আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার দখলের দাবি করেছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠি তালেবান। তাছাড়া বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দেশটির আরও কয়েকটি শহরের নাটকীয় পতন ঘটেছে। যদিও তালেবান এখনো বিজয় ঘোষণা করেনি।

এই কান্দাহার শহরটি একসময় তালেবানের শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও এটি কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কান্দাহার দখল করলে তা হবে তালেবাদের জন্য একটি বড় ধরণের বিজয়।

বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হেরাত, গজনিসহ আফগানিস্তানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান।

তালেবানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, 'কান্দাহারও সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।'

হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর লস্কর গাহ ও জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে যদিও সেটিও অন্য সূত্র থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।

কান্দাহারেই জন্ম হয়েছিলে তালেবান গোষ্ঠির। ফলে এর নিয়ন্ত্রণ জঙ্গিদের জন্য একটি বড় পুরষ্কার। শহরটির কেন্দ্রে হামলার আগে কয়েক সপ্তাহ তারা বেশ কিছু শহরতলী এলাকা দখল করে রেখেছিল। বুধবার তারা কান্দাহারের কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকে পড়ে এবং বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে সিটি সেন্টারে সন্ত্রাসী তৎপরতার ছবি দেখা গেছে।

কান্দাহারকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কারণে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে এটি একটি।

বৃহস্পতিবাই গজনিও দখল করেছে তারা যেটি তালেবানের বড় একটি সাফল্য কারণ এটা কাবুল-কান্দাহার সড়কে। ফলে এটি জঙ্গিদের দক্ষিণে তাদের ঘাঁটিগুলোর সাথে রাজধানী কাবুলের যোগসূত্র তৈরি করবে।

অন্যদিকে, প্রাচীন সিল্ক রোড সিটি হেরাতে নিরাপত্তা বাহিনী আর্মি ব্যারাকে ফিরে যেতে বাধ্য হওয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিল কয়েক সপ্তাহ। সেখানে পুলিশ সদর দপ্তরে তালেবানের পতাকার ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।

সেখানকার একজন অধিবাসী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, 'বিকেল থেকে সব বদলে গেছে। তালেবান দ্রুতগতিতে শহরে প্রবেশ করেছে এবং শহরের প্রতিটি কর্নারে তাদের পতাকা তুলেছে।'

তালেবান এখন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল এবং দেশটির আঞ্চলিক রাজধানীগুলোর এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

ফলে জঙ্গিরা রাজধানী কাবুলের দিকে দ্রুত অগ্রসর পারে সেখানে উদ্বেগ বাড়ছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের মার্কিন দূতাবাস থেকে আটকেপড়া কর্মীদের উদ্ধারে তিন হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছে। বিশেষ প্লেনে করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীকে নিয়ে আসতে কাবুল বিমানবন্দরে যাবে তারা।

তাছাড়া, ব্রিটিশ নাগরিকদের আফগানিস্তান ছাড়তে সহায়তা করতে অন্তত ছয়শ সৈন্য পাঠানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।

সামরিক অভিযানের প্রায় বিশ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য বিদেশি সৈন্যদের প্রত্যাহারের সাথে সাথেই নতুন নতুন এলাকা দখল করছে তালেবান।

জাতিসংঘ বলছে, গত কয়েক মাসে এক হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এ সপ্তাহেই উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো বাস্তুচ্যুত হয়েপড়া হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার আশায় কাবুলে এসেছেন।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, প্রায় ৭২ হাজার শিশু এসেছে কাবুলে যাদের বেশিরভাগ এখন রাস্তায় ঘুমাচ্ছেন। 

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি তালেবানের বিরুদ্ধে আফগান মিলিশিয়াদের এক করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গত বুধবার তিনি তালেবানবিরোধী হিসেবে পরিচিত সরকারপন্থী বাহিনীকে জমায়েত করতে মাজার-ই-শরীফে যান। তিনি সেখানে উজবেক ও তাজিক নৃগোষ্ঠীর নেতাদের সাথেও কথা বলেছেন।

এডিবি/