ন্যাভিগেশন মেনু

গোসাইরহাটে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ধস


ছয়মাস না পেরুতেই শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। একটি ঘর বেশী ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ইদিলপুর ইউনিয়নের মহিষখালী মৌজায় ২১টি পরিবারের জন্য নির্মিত অধিকাংশ ঘরেরই মেঝে, দেয়াল ও পিলারে ফাটল ধরেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে উপকার ভোগীদের মাঝে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বর্ষা মৌসুম শেষে ঘর গুলো মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আশ্রয়নের বাসিন্দারা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প (আশ্রয়ন প্রকল্প- ২) এর ক তালিকার গৃহহীন ভূমিহীন অসহায় পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ইদিলপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দি মৌজায় ৬৭ শতাংশ জমির উপর ২১ জন ভুমিহীন গৃহহীন পরিবরের জন্য সেমি-পাকা ঘর তৈরি করা হয়। প্রতিটি ঘর তৈরিতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

গেল অর্থ বছরের ১ম পর্যায়ে নির্মিত এসব ঘর গত ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উপকার ভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। সেমি-পাকা দুই কক্ষ বিশিষ্ট এসব ঘরে সংযুক্ত একটি রান্নাঘর ও টয়লেট রয়েছে। ছয় মাস না পেরুতেই ঘর গুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলে চাল দিয়ে পানি পরছে। ঘর তৈরিতে নিন্মমানের সামগ্রীর ব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে বাসিন্দারা।

গোসাইরহাট উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হুসাইন। কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার চৌধুরী।

উপকার ভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর দেয়ায় আমরা খুশি। কিন্তু ঘরে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে ঠিকাদাররা। বৃষ্টি নামলেই অনেক ঘর দিয়ে পানি পরে। চালে কাঠ ভাল না। স্ক্রু ঢিলে হয়ে পানি পরছে সারা ঘরে। এই কয়দিনেই ফ্লোর ফেটে গেছে। পিলারও ফাটা। কয়দিন টিকে জানিনা।

আশ্রয়ানের বাসিন্দা শিরিনা আক্তার ও ফাতেমা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছে আমরা অনেক খুশি হইছি। এখন সামনের তিনটা পিলারই ফেটে গেছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

আশ্রয়নের বাসিন্দা সৈয়দন নেসা বলেন, ঘরের মেঝে বারান্দার মেঝে ফাটল ধরছে। সব ঘরের একই অবস্থা। কোন কোন পিলারও ফেটে গেছে। এ নিয়ে এখন আমরা দুঃশ্চিন্তায় আছি।

আশ্রয়নের বাসিন্দা লুৎফা বেগম বলেন, আমরা ঘরের রান্না ঘর ও টয়লেট ভেঙ্গে থাকার মত কোন অবস্থা নাই। চেয়ারম্যান সাহেব ও পিআইও ম্যাডাম এসে আমাকে অন্য ঘরে থাকতে দিয়ে গেছে। পরে আমার ঘর মেরামত করে দিবে বলেছে। এই ঘরে সিমেন্ট কম দিছে। নাইলে এভাবে বিল্ডিং ফাটতে পারে না। কয়দিন হইছে আমরা আসছি এখনই এই অবস্থা। এই ঘরে কিভাবে থাকমু।

গোসাইরহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার চৌধুরী বিষয়টাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ওই জায়গাটা সিলেকশন ভূল ছিল। এবার অতিবর্ষনের করানে অনেক ধরনের সমস্য হচেছ। এরপরও আশ্রয়নটি টিকিয়ে রাখতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। বর্ষা মৌসুম শেষে সমস্যা গুলো সমাধান করে দেয় হবে।

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তানভির আল নাসিফ বলেন, আমি সম্প্রতি ওই উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। বিষয়টি জেনে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

আরএইচআর/সিবি / এস এস