ন্যাভিগেশন মেনু

জনগণের সুখের জন্য সিপিসি অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে


‘রাষ্ট্র জনগণ, আবার জনগণই রাষ্ট্র। উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত ও উন্নত করতে হবে; যৌথভাবে সুন্দর জীবন সৃষ্টির কাজে উত্সাহ দিতে হবে; এবং একটি উন্নত জীবনের জন্য জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করে যেতে হবে।’ 

১৬ অক্টোবর বেইজিংয়ের গণমহাভবনে অনুষ্ঠিত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি)-র বিংশতম জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কর্ম-প্রতিবেদন পেশকালে এসব কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তাঁর প্রতিবেদনে ‘জনগণ’ শব্দটি ছিল বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ।

বিগত দশ বছরে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যে, চীনের ক্ষমতাসীন পার্টি সিপিসি’র আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রম প্রতিফলিত হয়। সিপিসি বরাবরই জনগণের মৌলিক স্বার্থের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সিপিসি’র শত বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পার্টি কখনো নিজের বিশেষ স্বার্থ দেখেনি বা বিশেষ কোনো স্বার্থে কাজ করেনি। পার্টির কাছে সবসময় জনগণের স্বার্থই ছিল প্রথম স্থানে। এটি সিপিসি’র অনন্য বৈশিষ্ট্য।

বিশেষ করে সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেস থেকে সিপিসি চীনা জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে তিনটি বড় ঘটনা ঘটিয়েছে। এ সময় সিপিসি শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে; চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্র নতুন যুগে প্রবেশ করে; এবং চীন সার্বিকভাবে হতদারিদ্র্য থেকে মুক্তি লাভ করে ও মধ্যম মানের স্বচ্ছল সমাজ গড়ে তোলা লক্ষ্য পূরণ করে। প্রথম শত বছরের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছে চীন। এটি হলো সিপিসি ও চীনা জনগণের পরিশ্রমের ফল এবং এর বিশ্বব্যাপী সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক বিজয়। এ বিজয় ১৪০ কোটি মানুষের জন্য কল্যাণ, সুখ ও নিরাপত্তার অভূতপূর্ব অনুভূতি নিয়ে এসেছে।

বর্তমানে চীনের মাথাপিছু জিডিপি ১২.৫ হাজার মার্কিন ডলার। দেশটিতে মধ্যম আয়ের মানুষের সংখ্যা ৪০ কোটির বেশি। সিপিসি জনগণ ও জীবনকেন্দ্রিক মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করেছে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম শিক্ষাব্যবস্থা, বৃহত্তম সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং চিকিত্সাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। সিপিসি জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়নের ধারণা বজায় রেখে চলেছে এবং অব্যাহতভাবে জনগণের স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে চলেছে। ইউরোপীয় সংসদের সাবেক সদস্য মার্কো রিজো সম্প্রতি বলেছেন, চীনা ক্ষমতাসীন পার্টি হিসেবে সিপিসি জনগণের উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

সিপিসি-র জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সি চিন পিং তাঁর কর্ম-প্রতিবেদন বলেন, সিপিসি’র কেন্দ্রীয় দায়িত্ব হলো গোটা চীনের বিভিন্ন জাতির জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে সার্বিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিক শক্তিশালী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, দ্বিতীয় শত বছরের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা, এবং চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নে সার্বিক চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান বাস্তবায়ন করা। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত চীন মৌলিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করবে। ২০৩৫ সাল থেকে এ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়কালে চীনকে সমৃদ্ধ, শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক, সভ্য, সম্প্রীতিময় এবং সুন্দর একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির টানা ১৩ বছরের ট্র্যাকিং জনমত জরিপের ফল অনুসারে, সিপিসি ও চীন সরকারের প্রতি চীনা জনগণের সমর্থনের হার দীর্ঘকাল ধরে ৯০ শতাংশের উপরে রয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বের কোনো পার্টি বা সরকার সিপিসি বা চীনা সরকারের ধারে কাছেও নেই। মার্কিন বিখ্যাত জনসংযোগ সংস্থা এডেলম্যান-এর চলতি বছর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলা হয়, গত বছর চীনা সরকারের ওপর ৯১ শতাংশ চীনার আস্থা ছিল। এ ক্ষেত্রেও চীনা সরকারের অবস্থান বিশ্বে শীর্ষে।

 ‘জনগণের জন্য উন্নয়ন, জনগণের ওপর নির্ভর করে উন্নয়ন, জনগণের দ্বারা উন্নয়নের সাফল্য ভোগ’— এই হচ্ছে সিপিসি’র উদ্দেশ্য। সিপিসি অবশ্যই জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে আরও সুন্দর ভবিষ্যত ও উন্নয়নের অলৌকিক ঘটনা সৃষ্টি করে যাবে এবং বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নে আরও বেশি ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। - সূত্র: সিএমজি