ন্যাভিগেশন মেনু

তালেবানকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে পাকিস্তান: আফগান পপ তারকা


আফগানিস্তান তালেবানদের দখলে যাওয়ার পর থেকেই আশঙ্কায় ভুগছেন বিভিন্ন পেশাজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এরপর কয়েক হাজার আফগান কোনও ভাবে দেশ ছেড়েছেন কাবুল বিমানবন্দর হয়ে। এখনও কয়েক লক্ষ আফগান দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে দেশ ছেড়েছেন আফগানিস্তানের জনপ্রিয় পপ তারকা আরিয়ানা সাঈদ।

আর এরই মধ্যে এই পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করলেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আরিয়ানা জানান, আমি এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করবো।


তিনি বলেন, ‘তালেবানকে শক্তিশালী করার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে আমরা এর প্রমাণ পেয়েছি। আমাদের দেশের সরকার যখনই কোনো তালেবান জেহাদিকে আটক করেছে, দেখা গিয়েছে সে পাকিস্তানের নাগরিক। খুব স্বাভাবিকভাবেই আমি পাকিস্তানকে দায়ী করবো। এরপরই তিনি আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।’

এ প্রসঙ্গে আরিয়ানা বলেন, ‘পাকিস্তান তালেবান জেহাদিদের প্রশিক্ষণ দেয়। পাকিস্তানেই রয়েছে তাদের ঘাঁটি। তাই আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে আবেদন জানাবো, যাতে তারা পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য না করে। না হলে সেই অর্থ দিয়ে পাকিস্তান তালেবানদের সাহায্য করবে।’

আফগান মহিলাদের নিয়ে আরিয়ানা বলেন, ‘যে সব মহিলারা ঘরে বন্দি হয়ে রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে আমি চিন্তিত। তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাঁরা বাইরে বেরতে পারছেন না। পুরুষ সঙ্গে না থাকলে রাস্তায় বেরতে পারবেন না একজন মহিলা, স্কুলে যেতে পারবে না মেয়েরা। যদি আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ তালেবানের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে আফগান মহিলাদের ভবিষ্যৎ বলে আর কিছু থাকবে না। আমি আজ আফগানিস্তানে নেই। তবে দেশের বাইরে থেকেও আমি আফগানদের জন্য সোচ্চার হব।’

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যে সব মহিলারা স্বাধীনতার দাবিতে সরব হয়েছিলেন, তাদের পথ দেখিয়েছিলেন এই খোলামেলা পোশাক পরা জনপ্রিয় তারকা। আরিয়ানা দেশের দু’টি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে কাজ করেছেন।

একটি গানের অনুষ্ঠানে বিচারক হয়েছেন। আরিয়ানার জন্ম আফগানিস্তানের কাবুলে হলেও জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে সুইজারল্যান্ড এবং লন্ডনে। ফলে পশ্চিমা ভাবধারায় বেড়ে উঠেছেন। তার রক্তে মিশে রয়েছে তাজিক গোষ্ঠীর লড়াকু স্পর্ধা। আরিয়ানার মা ছিলেন তাজিক জনগোষ্ঠীর। দশকের পর দশক ধরে এই তাজিকরাই তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছে।

আরিয়ানার বয়স যখন আট বছর, তখন মা-বাবার হাত ধরে পাকিস্তানের পেশোয়ারে চলে এসেছিলেন। সেখান থেকে সুইজারল্যান্ড। সঙ্গীতের প্রতি তার ঝোঁক ছিল বরাবরই। ১২ বছর বয়সেই একটি মিউজিক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

২০১১ সাল থেকে আফগানিস্তানে তার গানের জনপ্রিয়তা দেখে ফিরে এসেছিলেন নিজের জন্মভূমিতে। তালেবানদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলায় ‘ব্রেভারি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন আরিয়ানা।

ওআ/