ন্যাভিগেশন মেনু

তাড়াশে পাট জাগের পানি সংকট, বিপাকে কৃষক


তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট সংগ্রহ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। পাটের ফলন ও দাম ভালো হলেও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

পাট পচাতে কৃষকরা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটছেন বিল-ডোবা বা পুকুর-নালার খোঁজে। অনেকে কৃত্রিম খাল তৈরি করে শ্যালোর পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে কৃষকের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এগুলো দেশি, তোষা এবং মেসতা জাতের পাট। গত বছরের চেয়ে এ বছর ৩২০ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, ধোয়া এবং শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। এবার পাটের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে খুশির ঝিলিক।

উপজেলার নওগাঁ গ্রামের চাষি হাবিব সরকার জানান, ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। ৬০ থেকে ৬৫ মণ পাট হবে। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। আশা করছি বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ পাট হবে। ন্যায্য মূল্য পেলে ভালো লাভ হবে।

হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী বলেন, পাট চাষের জমি উপযোগী করা থেকে নিড়ানি দেওয়া, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো ও শুকানো পর্যন্ত শ্রমিকের মজুরি খরচ অন্যান্য ফসলের তুলনায় একটু বেশি পড়ছে। পাট জাগের পানির অভাবে পরিবহন খরচ গাড়ি প্রতি হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে।

কৃষক মাহবুবুর রহমান বলেন, পানির জন্য ৪-৫ কিলোমিটার দুরে গাড়িতে করে পাট জাগ দিতে নেওয়া হচ্ছে। পাটের বর্তমান বাজার ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা মণ চলছে। কমে গেলে কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে পাট চাষে বিভিন্ন পরামর্শসহ মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পাট চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে ।

কৃষকদের বিনামূল্যে পাটবীজ ও রাসায়নিক সার প্রদানসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে পাট চাষে ঝুঁকছে কৃষক। প্রতিবছরই পাটচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আগে কৃষক বৃষ্টি নির্ভর ছিল। বর্তমানে কৃষক জমিতে সেচ ব্যবস্থায় পাটের চাষাবাদ করছেন। যার কারণে পাট  উৎপাদন হচ্ছে অনেক বেশি। এবার তুলনামূলক বৃষ্টিপাত কম। যার কারণে উন্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষক কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন।

তবে কৃষকরা রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট প্রক্রিয়া করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে অল্প পানিতে বেশি পরিমাণ পাট জাগ দিতে পারবেন। সাধারণত পাট জাগে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। আর রিবন রেটিং পদ্ধতিতে ১২-১৪ দিনে হয়ে যায়। এই পদ্ধতিতে পাটের রং ও মান অনেক ভালো হয়।

এমএমএম/এডিবি/