ন্যাভিগেশন মেনু

নিউইয়র্কে বিনম্র শ্রদ্ধায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন


ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রবাস প্রজন্মে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি জাগ্রত রাখার সংকল্পে নিউইয়র্কে তিন শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, আঞ্চলিক সংগঠন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়।

এ উপলক্ষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কন্স্যুলেট ভবন, জ্যাকসন হাইটস বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ডাইভার্সিটি প্লাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কুইন্স প্যালেস, বাংলাদেশ সোসাইটির উদ্যোগে উডসাইডে গুলশান টেরেস, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এস্টোরিয়ায় সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে এবং ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, জ্যামাইকায় বেশ কয়েকটি স্থানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।

একুশের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের মতোই এসব শহীদ মিনারে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানে গানে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন সর্বস্তরের প্রবাসীরা।

 দিবসটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষিত হওয়ায় রাজনৈতিক সচেতন ভিনদেশীরাও শরিক হয়েছিলেন।

জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালি চেতনামঞ্চের উদ্যোগেও অস্থায়ী একটি শহীদ মিনারে বাংলাদেশের সময়ের সাথে মিলিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ১মিনিটে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন এবং এলাকাবাসীর নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

গুলশান টেরেসে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন পরিক্রমার সমন্বয় করেছেন বাংলাদেশ সোসাইটির নেতৃবৃন্দ। এখানে শতাধিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা এসেছিলেন।

 কুইন্স প্যালেসের শহীদ মিনারের কর্মসূচি সমন্বয় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ।

 অপরদিকে, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের যৌথ উদ্যোগে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কনস্যুলেট জেনারেল মিলনায়তনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বাহান্ন’র ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের এই আয়োজন শুরু হয় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

তারপর দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো: আরিফুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ।

“আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি” গানের সাথে সাথে নিউইয়র্ক সময় ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর অর্থাৎ রাত ১২টা ১ মিনিটে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো পর্ব শুরু হয়।

ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পন করে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা’র নেতৃত্বে স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ।

এরপর কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসার নেতৃত্বে কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

একে একে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাঙালি।

ওআ/এডিবি