পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সীমান্ত গ্রাম দর্জিপাড়ায় ফুটেছে রাজসিক বিভিন্ন রং এর টিউলিপ। বিদেশে ফুল দেখতে বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়। জানা যায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকো সোস্যাল ডেভলেভমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)’র উদ্যোগে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফের আর্থিক সহযোগিতায় তৃতীয়বারের মতো দর্জিপাড়ায় ১৬ জন নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ বছর ২৫ হাজার ব্লাব (বীজ) দিয়ে টিউলিপ চাষ করা হচ্ছে। চলতি সালের জানুয়ারী মাসের ১০ তারিখে জেলার সীমান্তঘেঁষা গ্রাম দর্জিপাড়ায় রোপন করা হয় টিউলিপের ব্লাব। পরবর্তী ২০-২৫ দিনের মধ্যে চারা গজিয়ে কয়েক সারিতে ফুল ছড়িয়ে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে টিউলিপ।
এবার ১৯ প্রজাতির টিউলিপের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টার্কটিকা (সাদা), ডেনমার্ক (কমলা ছায়া), লালিবেলা (লাল), ডাচ সূর্যোদয় (হলুদ), ষ্ট্রং গোল্ড (হলুদ), জান্টুপিঙ্ক (গোলাপী), হোয়াইট মার্ভেল (সাদা), মিস্টিক ভ্যান ইজক (গোলাপী), হ্যাপি জেনারেশন (সাদা লাল শেড) ও গোল্ডেন টিকিট (হলুদ)। এবার দেরিতে টিউলিপ লাগানো হলেও আগামী দুই-তিন মাস স্থায়ী হবে এমনটি আশা চাষীদের । এছাড়া চলতি ফেব্রুয়ারি এবং আগামী মার্চ মাস জুড়ে এখানকার আচার- অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবস ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুল প্রেমিদের বাহারী টিউলিপ মুগ্ধ করবে।
টিউলিপ চাষী নারী উদ্যোক্তা কৃষাণীরা জানান, টিউলিপ ফুল দেখতে এ অঞ্চলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটতে শুরু করেছে।
যদিও এ বছর সবগুলো গাছে এখনো ফুল আসেনি, ফুল ফুটতে শুরু করেছে। আশা করছি গত দুই বছরের মতো এবারও টিউলিপের দৃষ্টি নন্দন সৌন্দর্য ও হাসিতে পর্যটকদের মনে দোলা দিবে।
গত শনিবার রংপুর থেকে পিকনিকে তেঁতুলিয়া পিকনিকে আসা দিলারা বেগম। টিউলিপ বাগানে কথা হলে বলেন, আমি যখনই শুনেছি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টিউলিপের চাষ হচ্ছে। তখন থেকেই টিউলিপ দেখার ইচ্ছা ছিল। আজ বাগানে এসে ভিনদেশি টিউলিপ দেখে খুব ভাল লাগছে। একইভাবে দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও থেক আসা পর্যটক শিক্ষক নুসরাত জুলি ও প্রভাষক মাসুদ বলেন, আমরা টিউলিপ দেখতে ছুটে এসেছি এখানে। অসাধারণ ও সুশোভিত ফুল টিউলিপ। সত্যিই খুব মুগ্ধ হয়েছি।
এমন সৌন্দর্যের মুগ্ধতার কথা জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকরাও। জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার ও পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক (ভার.) মোঃ নইমুল হুদা সরকার বলেন, তেঁতুলিয়ার সীমান্ত এলাকায় ১৯ প্রজাতির বিদেশী টিউলিপ ফুলের চাষ হচ্ছে। ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মূদ্রা আয় করা সম্ভাব হবে। এছাড়া পঞ্চগড় অঞ্চলের আবহাওয়া টিউলিপ চাষের উপযোগী হওয়ায় এই ফুলের চাষাবাদ বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
