ন্যাভিগেশন মেনু

সড়কের বেহাল দশা, দেখার কেউ নেই!

পটিয়ার কালা গাজী সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি দীর্ঘ ১৫ বছরেও

পটিয়া উপজেলাধীন বড়লিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ওকন্যারা গ্রামের কালা গাজী সড়কের বেহাল দশা। বর্তমান সরকার আমলে পটিয়ার সব ইউনিয়নে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও কিন্তু এই সড়কের অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেখার কেউ নেই। আনুমানিক দুই কিলোমিটারের এই সড়কটির দৈর্ঘ্য কম হলেও বড়লিয়া ও আশিয়া ইউনিয়নকে সংযুক্ত করায় দুই ইউনিয়নের মানুষের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ সড়কটি এক পাশে আশিয়া বাংলা বাজার, আশিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং একটি কিন্ডারগার্ডেন রয়েছে। অপর পাশে বড়লিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডারগার্ডেন এবং ১টি মাদ্রাসা রয়েছে।

বর্তমান সরকারের সময় গ্রাম-গঞ্জে রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এই সড়কটির কোন উন্নয়ন হয়নি বরং যতই সময় যাচ্ছে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে ১৮/১৯ বছর আগে একবার ইট বসানো হয়ছিল। এর পর আর কোন সংস্কার হয় নি। ফলে সড়কের কোথাও ইট আছে তো কোথাও ইটের চিহ্ন মাত্র নেই। তাছাড়া সড়কটি নিচু হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর সৃষ্ট মৌসুমি বন্যায় সড়কটি ডুবে যায়। এই সব কারণে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া, গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়মিত চেক আপে যাওয়া এবং বাজারগামী ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহণ ও ক্রেতাদের যাতায়ত দুষ্কর হয়ে পড়েছে।

আশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদিল বলেন, "স্কুল এবং বাজারে যাওয়ার জন্য এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৩/৪ বার যাতায়ত করতে হয়। সড়কের খারাপ অবস্থার জন্য আমাদের স্কুলে যাতায়ত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে এই দুর্দশা চরমে পৌঁছে। সড়কটি পুনরায় সংস্কার করলে আমরা স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্য উপকার হতো।"

এলাকার বয়োঃবৃদ্ধ নুর মোহাম্মদ বলেন, "আমার ২ ছেলে বিদেশে অবস্থান করায় পরিবারের নিত্যপণ্যের বাজার আমাকে করতে হয়। রাস্তা অবস্থা খারাপ হওয়ায় কোন রিক্সা চলাচল করে না।আমি অ্যাজমার রোগী। বাধ্য হয়ে এই রাস্তা দিয়ে বাজারে একবার গেলে আমার জান বের হওয়ার উপক্রম হয়।"

এলাকার শামসুল আলম বলেন, 'দুটি ইউনিয়নের যাতায়াতের প্রধান সড়ক। স্কুল, মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের দুর্ভোগ পড়ে। কোন প্রসূতি মাকে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। বিএনপি সরকার আমলে এই রাস্তায় ইট দিয়ে সড়কটি করা হয়েছিল। কিন্তু সংস্কার না কাজ আর না হওয়ায় বেহাল অবস্থায় পরিণত। এরপর গতবার এমপি সামসুল ক্ষমতায় কয়েকবার থাকার পরও সড়কটি সংস্কার করেনি। বর্তমান এমপি মোতাহেরুল মহোদয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সড়কটি নতুনভাবে সংস্কার করে দিবেন৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত এটি কোন কাজ ধরেনি। দ্রুত সময়ে এটি সংস্কার করে আমাদের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্ত দিতে অনেকবার এলাকার চেয়ারম্যানকে তাগাদা দেয়া হয়েছিল।'

শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, 'আমাদের প্রতিদিন যাতায়াতের জন্য কালা কাজী সড়কটি দিয়ে আসা-যাওয়া করি। স্কুল ও মাদ্রাসা থাকাতে বর্ষাকালে চলাচলে ওই সড়কে বেশি দুর্ভোগে পোহাতে হয়। বড়লিয়া ও আশিয়া ইউনিয়নের মানুষদের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। আমরা চাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।'

পটিয়া উপজেলার সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'বড়লিয়া চেয়ারম্যান সাথে এই বিষয়ে আমি কথা বলবো। আমি সড়কটি দিয়ে ঘুরে দেখে আসবো৷ বরাদ্দ পেলে এটি দ্রুত সময়ে সংস্কার করা হবে। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি কিন্তু এখনো কোন বরাদ্দ পাইনি। দুটি ইউনিয়নের যোগাযোগের সংযোগ সড়ক, তাই এটি নতুনভাবে সংস্কার করা জরুরী।'

বড়লিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম শানু বলেন, "গতবার এমপি শামসুল হক মহোদয় প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সেটা আর কাজ করতে পারেনি। ইটের সড়কটি এখন মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। এবার নতুন এমপি মোতাহেরুল মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেছিলাম। বরাদ্দ পেলে এটি সংস্কার কাজে উদ্যোগ নিবেন আশা দিয়েছিলেন। আমরাও চাচ্ছি এটা দ্রুত সময়ে কাজটি করা হোক।'

এলজিইডি'র উপজেলা প্রকৌশলী কলম কান্তি পাল বলেন, 'এই বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মহোদয় থেকে কোনকিছু জানায়নি। সড়কটি অনলাইন দেখতে হবে কি নামে আছে। সড়কটি খারাপ অবস্থায় থাকলে, তা সংস্কার করা হবে। আমাকে যখন অবগত করেছেন, বিষয়টি আমি দেখবো।'

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলাউদ্দীন ভূঞা জনী সাথে ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করলেও কোন সাড়া পাওয়া যাইনি।