ন্যাভিগেশন মেনু

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে চবি প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরাও খুবই মর্মাহত। সকল শিক্ষার্থী আমাদের সন্তানের মতো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হয়, তা আপনারা জানেন। এসব বিষয়ে চাইলেও সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া যাই না।

আমাদের কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। এসব অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে হয়। যেকোন ঘটনায় ডিসিপ্লিন কমিটি রয়েছে। সম্প্রতি ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমরা মামলা করবো এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকটের জন্য রেলওয়ে সংসদীয় কমিটি প্রধান এমপি ফজলে করিম সাথে কথা হয়ছে। বগি আসলে চবির জন্য দেওয়া হবে। কিন্তু নতুন বগি আসলে সেটা অন্যদিকে চলে যায়। তবে আমরা চেষ্টা করছি শাটলের বগি বৃদ্ধি করার।

শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ বিতর্কের বিষয়ে চবি উপাচার্য বলেন, গত চার বছরে ইউজিসি কোনো লোক নিয়োগ দেয়নি। কিন্তু আমাদের নতুন বেশকিছু হল উদ্বোধন করেছি, যেগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লোক প্রয়োজন। তাই খণ্ডকালীন লোক নিয়োগ দিতে হচ্ছে।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের চারুকলা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে চবি উপাচার্য আরও বলেন, আপনারা জানেন বিগত কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির একাংশ চবি উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবীতে যে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে তা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রতিবাদ বা আন্দোলন পরিচালনা করা হলেও আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে চাই, ১৯৭৩ সালের চবি আইন অনুযায়ী সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে সর্বোচ্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিষদ। যদি সত্যিই কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে থাকে, শিক্ষক সমিতির সিন্ডিকেটের কাছে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা পক্ষ চাইলে দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক আদালতের শরণাপন্নও হতে পারেন। সেটা না করে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করা এবং পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিয়ম-অনিয়ম নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরীর মধ্য দিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করা।

চবি উপাচার্য আরও বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্তপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভার মাধ্যমে ওই অধ্যাপককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

গত ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি দফায় দফায় ছাত্রদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সর্বোচ্চ পরিশ্রম এবং সংযম প্রদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এসব ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা বদ্ধপরিকর।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদ, প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজম সিকদার, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ বিভিন্ন আবাসিক হলের প্রভোস্টসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্ষদের শিক্ষক, কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।