ন্যাভিগেশন মেনু

লেবাননে জ্বালানিবাহী ট্যাংক বিস্ফোরণে নিহত ২২


লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় আক্কার অঞ্চলের আলতালিল শহরে জ্বালানিবাহী ট্যাংক বিস্ফোরণে ২২ জন নিহত ও ৭৯ জন আহত হয়েছে।

রবিবার (১৫ আগস্ট) দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্রে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, সেনাবাহিনী কালোবাজারীদের লুকিয়ে রাখা একটি জ্বালানি ট্যাংক জব্দ করেছিল সেটি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের পেট্রল হস্তান্তরের সময় এই বিস্ফোরণ ঘটে।

বর্তমানে লেবানন জ্বালানির তীব্র সংকটে ভুগছে, যার ফলে গ্যাস স্টেশনে দীর্ঘ লাইন এবং অনেক তেল কালোবাজারীদের কাছে চলে গেছে।

বিস্ফোরণের সময় প্রায় ২০০ জন লোক বিস্ফোরণস্থলের কাছাকাছি ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

লেবাননের রেডক্রস টুইটারে বলছে, ‘আমাদের টিম কাক্কারে জ্বালানিবাহী ট্রাকের বিস্ফোরণের পর ওখান থেকে ২০টি মৃহদেহ হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

তিনি আরও জানান, মৃতদেহগুলো এতোটাই পুড়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা যায়নি।

সূত্র জানায়, নিহতদের মধ্যে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তবে কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে তার হিসাব ভিন্ন।

তত্ত্বাবধায়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান বলেন, সবচেয়ে বেশি দগ্ধ হওয়াদের জীবন বাঁচাতে সম্ভবত বিদেশে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।

একটি নিরাপত্তার সূত্র জানায়, 'লোকজনের ভিড় ছিল এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনের মধ্যে তর্ক -বিতর্কের ফলে গোলাগুলি হয় যা পেট্রলের ট্যাঙ্কে আঘাত করে এবং তাই এটি বিস্ফোরিত হয়।'

স্থানীয় আল-জাদিদ টিভি চ্যানেল প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে রিপোর্ট করেছে যে, এটি এক ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল যিনি একটি লাইটার জ্বালিয়েছিলেন।

ত্রিপোলির আল-সালাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সমস্ত শরীর ব্যান্ডেজে মোড়ানো আবদুল রহমান জানান, তিনি পেট্রল পাওয়ার জন্য লাইনে ছিলেন।

তিনি বলেন, 'ট্যাঙ্কের ঠিক পাশেই সেখানে শত শত লোক জড়ো হয়েছিল, ঈশ্বর জানেন যে তাদের কী হয়েছিল।'

হাসপাতালে নিহতের অপর একজনের বাবা জানান, তার আরও দুটি ছেলে রয়েছে, তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা এখনও বিস্ফোরণের স্থান অনুসন্ধান করছে।

রয়টার্সকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, আক্কারের ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে দুটি ডাম্প ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা রশিদ মাকসুদ বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে নিকটবর্তী ত্রিপোলির হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, অন্যদের বৈরুতে পাঠানো হয়েছে।

আল-সালাম হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সালাহ ইসহাক বলেন, আহতদের অধিকাংশের অবস্থা গুরুতর। আমরা তাদের সুচিকিৎসা দিতে পারছি না, আমাদের ক্ষমতা নেই। এটা খুবই খারাপ পরিস্থিতি।'

এদিকে দেশটিতে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট চলছে। বিশ্বব্যাংক ১৮৫০ সালের পর একে গ্রহের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এছাড়া লেবাননে মারাত্মক জ্বালানি সংকটও রয়েছে। জ্বালানি স্বল্পতার কারণে অনেকেই দিনে মাত্র দ'ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে অনেক হাসপাতালই সতর্ক করে বলেছে, বিদ্যুতের অভাবে তাদেরকে হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে। তাছাড়া, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কম সরবরাহের কথাও জানানো হয়েছে।

সিবি/এডিবি/