ন্যাভিগেশন মেনু

শুভ জন্মদিন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান


বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের জন্মদিন আজ। ১৯৮৭ সালে আজকের দিনে মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই তারকা ক্রিকেটার। আজ ৩৪ বছরে পা দিলেন বাংলাদেশি পোস্টারবয়।

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের জন্মদিনে ভক্ত, সতীর্থ থেকে শুরু করে সর্বসস্তরের মানুষ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আইপিএলে সাকিবের দল কলকাতা রাইডার্সও বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। নিজেদের ফেসবুক পেজে সাকিবকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে কেকেআর লিখেছে, ‘আমাদের প্রিয় সাকিব আল হাসানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। শুভ জন্মদিন। আপনি সব সময় আমাদের কাছে সুপারস্টার হিসেবে থাকবেন।’ ক্রিকইনফো আবার কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে সাকিবকে, ‘সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার প্লাস রান এবং ৫০০ প্লাস উইকেট শিকারি তিনজন খেলোয়াড়ের একজন। একজন অলরাউন্ডার সুপারস্টার, বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।’

জন্মদিনে সতীর্থরাও সাকিবকে অভিনন্দন বার্তা জানাতে ভোলেননি। ইমরুল কায়েস নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একজন সেরা ক্রিকেটার, সতীর্থ, বন্ধু এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের আদর্শ সাকিব আল হাসান। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।’

অফিস্পিনার নাঈম হাসান লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন সাকিব ভাই। আপনার সমৃদ্ধ জীবন কামনা করছি এবং আপনার সাথে আরও ম্যাচ খেলার আশা করছি।’

আরেক তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেনও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাকিবকে, ‘শুভ জন্মদিন ভাই।’ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘যে মানুষটি লক্ষ লক্ষ স্বপ্নকে অনুপ্রাণিত করেছিল তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। শুভকামনা, সাকিব ভাই।’

নারী দলের পেসার জাহানারা আলম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমাদের কিংবদন্তি সাকিব আল হাসান ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আল্লাহ আপনাকে সুস্বাস্থ্য এবং আরও অনেক সাফল্য দান করুন।’

যুব বিশ্বকাপজীয় দলের পেসার শরিফুল ইসলামও সাকিবের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এভাবে, ‘শুভ জন্মদিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিব ভাই।’ পেসার রুবেল হোসেন লিখেছেন, 'শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার, লিজেন্ড সাকিব আল হাসান। ভাই আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ও দোয়া রইল।'

সাকিব পাড়ায় একদিন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একজন আম্পায়ারের চোখে পড়েন। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় মাগুরার ইসলামপুর পাড়া ক্লাবে। সেই ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে সাকিব প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেন। প্রথম বলেই তুলে নিয়েছিলেন উইকেট। প্রকৃত ক্রিকেট জীবনের শুরু সেই বল থেকেই।

সাকিব বিকেএসপিতে এসে ভর্তি হন ৬ মাসের কোর্স করার জন্য। খুব দ্রুতই নিজেকে পরিচিত করে তোলেন সাকিব। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার। এছাড়া জাতীয় লিগে খেলার জন্য তালিকাভূক্ত হন খুলনা বিভাগীয় দলে।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দ্যুতিময় পারফরম্যান্সই সাকিবকে নিয়ে আসে পাদপ্রদীপের আলোয়। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে (অপর দুটি দেশ ছিল ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা) মাত্র ৮৬ বলে সেঞ্চুরি করে ও ৩টি উইকেট নিয়ে দলকে জেতাতে সহায়তা করেন তিনি। ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সাকিব অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ১৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ৩৫.১৮ গড়ে সংগ্রহ করেন মোট ৫৬৩ রান এবং ২০.১৮ গড়ে নেন মোট ২২টি উইকেট।

এরপর ২০০৬ সালের জিম্বাবুয়ে সফরে সাকিব প্রথমবারের মত বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। একই সিরিজে ওয়ানডে অভিষেক হয় ফরহাদ রেজা এবং মুশফিকুর রহীমের। সেই সিরিজেই হারাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় সাকিবের।

২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠে আসেন সাকিব। এই ধারাবাহিকতায় টেস্টেও নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করে সেরা অলরাউন্ডারের আসন দখল করেন তিনি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হন তিনি। যা ক্রিকেট বিশ্বে একমাত্র ঘটনা।

ওয়ানডে অভিষেকের পরের বছরই ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অভিষেক হয় সাকিবের। ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০০৯ সালেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির ইনজুরির কারণে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একইভাবে দায়িত্ব পান তিনি। এরপর তার নেতৃত্বেই ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ।

ওয়ানডেতে ২০৬ ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ১৯৪ বার। ৩৭.৮৬ গড়ে করেছেন ৬৩২৩ রান। রয়েছে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৭টি হাফসেঞ্চুরি। এক ম্যাচে তার সেরা ১৩৪ (অপরাজিত)। আর ২০৩ ইনিংসে বল করে ৩০.২১ গড় ও ৪.৪৮ ইকোনোমিতে নিয়েছেন ২৬০ উইকেট। ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন দু’বার। সেরা বোলিং ফিগার ২৯ রানে ৫ উইকেট।

ওআ/