ন্যাভিগেশন মেনু

শুভ জন্মদিন মিষ্টি নায়িকা পূর্ণিমা


জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পূর্ণিমার জন্মদিন আজ রবিবার (১১  জুলাই)। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করেন মিষ্টি হাসির এই চিত্রনায়িকা। তবে ঢাকাতেই কেটেছে তার শৈশব ও শিক্ষাজীবন। তার পুরো নাম দিলারা হানিফ পূর্ণিমা।

৪০ পেরিয়ে ৪১ বছরে পা রাখলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী। এই বয়সটা তার কাছে কেবলই একটা সংখ্যা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সৌন্দর্য যেন দিন দিন বাড়ছে। এই বয়সেও কীভাবে তিনি এমন সৌন্দর্য ধরে রেখেছেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় সোশ্যাল মিডিয়াসহ নানা মাধ্যমে।

১৯৯৭ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে পূর্ণিমার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। নায়ক ছিলেন রিয়াজ। এ জুটি একসঙ্গে সর্বাধিক ২৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এক সময় রিয়াজ-পূর্ণিমা জুটি ছিল খুবই দর্শকনন্দিত।

দীর্ঘ ২৩ বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্য হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন পূর্ণিমা। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘সুভা’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘পিতা-মাতার আমানত’, ‘কে আমি’, ‘পরাণ যায় জলিয়া রে’, ‘মাটির ঠিকানা’ উল্লেখযোগ্য। ২০১০ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পেয়েছেন ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। এছাড়াও তার পুরস্কারের ঝুলিতে রয়েছে বাচসাস পুরস্কার, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার সহ অজস্র সম্মাননা।

আজকের জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোন আয়োজন নেই পূর্ণিমার। করোনা’র এই ক্রান্তিকালে পরিবারের সাথেই সময় কাটবে তার। আগামী ঈদে পূর্ণিমা’কে কোন নাটকে অভিনয়েও দেখা যাচ্ছেনা। তবে এরইমধ্যে তিনি প্রায় শেষ করেছেন দু’টি সিনেমার কাজ। একটি ওবায়দুল কাদেরের সাহিত্য অবলম্বনে ‘গাঙচিল’ এবং অন্যটি ‘জ্যাম’। তবে সিনেমা দু’টি কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ করোনার কারণে বিশেষত বাংলাদেশের মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত।

পূর্ণিমা বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কোনো আয়োজন করছি না। পরিবারের সঙ্গে বাসাতেই সময় কাটাবো। রাত থেকেই সহকর্মী, ভক্তদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা পাচ্ছি অনেক। এই ভালোবাসাটাই তো অনেক কিছু।’

তিনি আরো বলেন, ‘সবাই আমাকে এখনো এতো এতো ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছেন, সাপোর্ট করছেন প্রতিটা মুহূর্তে; এটাইতো শিল্পী হিসেবে বড় পাওয়া। এমন ভালোবাসা নিয়েই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।’

পূর্ণিমা’কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা বলেন, ‘আমি তো পূর্ণিমাকে আমার মেয়ের মতোই স্নেহ করি, আদর করি। পূর্ণিমা খুব ভালো একজন অভিনেত্রী এবং একজন ভালো মানুষও বটে।’

ববিতা বলেন, ‘তার অভিনীত প্রথম সিনেমায় আমি ছিলাম। তখন পূর্ণিমা অনেক ছোট। এখনতো অভিনয়ে বেশ পরিপক্ক। চলচ্চিত্র তো একটি পরিবার। আমাদের পরিবারেরই মেয়ে পূর্ণিমা। তার জন্য অনেক দোয়া। আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।’

পূর্ণিমা প্রসঙ্গে অরুনা বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের পূর্ণিমা ভীষণ মেধাবী একজন শিল্পী। আমি তার অভিনয়ের ভক্ত, আমি তাকে অনেক ভালোবাসি।’

ফেরদৌস বলেন,‘চলচ্চিত্রে পূর্ণিমা আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আমার বিপদ আপদ সুখ দু:খ নানান কথা তার সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি শেয়ার করি। অভিনয়ে পূর্ণিমা পরিপূর্ণ, পরিণত। এই সময় তাকে ভালো ভালো গল্পে অনেক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলোত তাকে বেশ ভালোভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, যেসব কাজ আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে পারে। মেধাবী পরিচালকদেরই সেই উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু কষ্টের বিষয় হচ্ছে একজন শিল্পী যখন অভিনয়ে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে বাংলাদশের প্রেক্ষাপটে তখনই তার কাজ কমতে থাকে। এটা কোনভাবেই ঠিক নয়। পূর্ণিমার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভ কামনা। সে তার পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকুক সবসময়।’

বর্তমানে স্বামী, সন্তান ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন অভিনেত্রী। ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে আহমেদ জামাল ফাহাদকে তিনি বিয়ে করেন। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিলে কন্যা সন্তানের মা হন। তার মেয়ের নাম আরশিয়া উমাইজা।  ২০১৪ সালের পর থেকে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হন তিনি। সন্তান ও সংসার নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত ছিলেন। এরপর ধীরে ধীরে টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনে নিয়মিত দেখা যায়। এখন টেলিভিশন নাটক ও অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন অভিনেত্রী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ সক্রিয় অভিনেত্রী। প্রতিনিয়ত নিজের কার্যক্রমের আপডেট দেন তিনি। তার প্রায় প্রতিটি কার্যক্রম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কল্যাণে পৌঁছে যায় ভক্তদের কাছে।

দৈনিক বাংলাদেশ পোস্টের পক্ষ থেকে এই অভিনেত্রীর জন্য রইল অনেক শুভ কামনা।

ওআ/