ন্যাভিগেশন মেনু

সম্প্রীতির নজির, কাশ্মীরি পণ্ডিতের সৎকারে করলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা


প্রচণ্ড তুষারপাত। রাস্তাঘাট ঢেকে রয়েছে বরফের চাদরে। কয়েক ফুট সামনের রাস্তাও পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এই কঠিন আবহাওয়াতেই সম্প্রীতির নজির গড়ে এক কাশ্মীরি পণ্ডিতের  মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে দশ কিলোমিটার পথ হাঁটলেন তাঁরই কয়েকজন মুসলিম প্রতিবেশী। সৎকারেও তাঁরাই সাহায্য করেন। গত শনিবার কাশ্মীরের   সোপিয়ান   জেলার এই ঘটনাটি সামনে আসতে অনেকেই ওই মুসলিম ব্যক্তিদের কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।

 শনিবার সকালে ভাস্কর নাথ নামে ওই কাশ্মীরি পণ্ডিত SKIMS হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ার কারণে মারা যান তিনি। কিন্তু ভারী তুষারপাতের কারণে বরফ পড়ে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়।

যে কারণে শ্রীনগর থেকে নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্সটি পারগোচি এলাকায় যাওয়ার পথে আটকে পড়ে। তখনও ভাস্কর নাথের বাড়ি দশ কিলোমিটার দূরে।

এরপরই অ্যাম্বুলেন্সের চালক ভাস্কর নাথের বাড়িতে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। শেষপর্যন্ত সমস্তটা জানতে পেরে ভাস্করের মুসলিম প্রতিবেশীরাই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।

তুষারপাতের মধ্যেই পুরো রাস্তা কাঁধে করে মৃতদেহটি বয়ে নিয়ে গ্রামে ফেরেন তাঁরা। এরপর শেষকৃত্য সম্পন্নও করেন। 

গোটা ঘটনায় নিজেদের প্রতিবেশীদের ভূমিকায় খুশি ভাস্কর নাথের পরিবার। নয়ের দশকে কাশ্মীর ভূখণ্ড থেকে কয়েক লক্ষ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের তাড়িয়ে দেয় জঙ্গিরা। হিন্দুদের রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য লাগাতার হুমকি দেওয়া হয়।

ধর্ষণ, গণহত্যার জেরে উপত্যকা থেকে দলে দলে পালিয়ে আসে হিন্দুরা। পরিসংখ্যান মতে ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে প্রায় ৬ লক্ষ হিন্দু ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ হাজারে।

যে পণ্ডিতরা সেখানে থেকে গিয়েছিলেন তাঁদের একজন ছিলেন এই ভাস্কর নাথ। তবে তাঁর পরিবারের লোকজন সাক্ষাৎকারে এটাও জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিবেশীরা বরাবরই তাঁদের পাশে থেকেছেন।

দুই ধর্মের মানুষই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামে থাকছেন। তারই উদাহরণ এই ঘটনা।

এস এস