বাংলাদেশের আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত রাজশাহীতে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে আমসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমের মৌসুমে ঝড় হওয়ায় প্রায় ২৫ শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে।
আম ছাড়াও লিচু, কলা, ভুট্টা, পেঁপে ও ধানসহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের চাষিরা।রাজশাহীর পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাঘা, চারঘাট, পবা, বাগমারা, গোদাগাড়ী, মোহনপুর ও তানোরেও ঝড়ে আমসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আমের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাঘা-চারঘাট, পুঠিয়া ও দুর্গাপুরে। এই চার উপজেলায় আমচাষ সাধারণত বেশি হয়।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আমরা আমসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি নিরুপণে মাঠে নেমেছি।
আমাদের ধারণা গড়ে ২০-২৫ শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে। গড়ে ১৫ শতাংশের কিছু বেশি আম ঝড়ে পড়েছে।’ ঝড়েপড়া সেই আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ পয়সা কেজি দরে। অথচ এই কাচা আম তারা বিক্রি করেছেন ৫০ টাকা কেজি দরে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত চারঘাট-বাঘায় তাণ্ডব চালায় বিরতিহীনভাবে।
আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের দাবি, আমের এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব। এ ছাড়া অনেকে আমের চালান ঘরে তোলা দুষ্কর হবে বলে মনে করছেন তারা। এমনিই মহামারী করোনায় আম নিয়ে চাষি ও ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
কারণ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডব সব কিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। আর কযেক দিন পরেই সব ধরনের আম পাড়া শুরু হবে। এরই মাঝে সব কিছু শেষ করে দিল আমফান।
কালুহাটি গ্রামের আমচাষি বীর বাহাদুর জানান, ঝড়ে আমসহ ভুট্টা ও তিলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে আম বিক্রি হতো ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে, সেই আম ঝড়ে পড়ে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ পয়সা কেজি দরে।
আম কেনার লোকও পাওয়া যাচ্ছে না। রাজশাহী কৃষি উপপরিচালক শামসুল হক বলেন, আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা পুষিয়ে ওঠা কঠিন হবে।
এতে প্রায় ২৫-৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।ঝড়ে আমসহ ফসলের ক্ষতি ছাড়াও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বুধবার সন্ধ্যা থেকে চারঘাট-বাঘা উপজেলা ছিল বিদ্যুৎবিহীন। কোথাও ছিল না বিদ্যুৎ।
এস এস