পদ্মানদীর পানি বাড়তে থাকায় রাজবাড়ীর পাঁচ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার প্রায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
চরম দুর্ভোগে জীবন কাটাচ্ছে ৬০ হাজার মানুষ। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট।
জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, পদ্মার পানি এখন বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে জেলার নতুন নতুন এলাকা।
জেলা সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ ও কালুখালী উপজেলার সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থা রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের গোপালবাড়ি এলাকা। এমন পরিস্থিতিতে ৪০ মিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে জরুরিভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আতিউর রহমান নবাব জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক এলাকা বন্যায় তলিয়ে গেছে।
রতনদিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মেহেদী হাচিনা পারভীন নিলুফা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেছেন দ্রুত তিনি সরেজমিনে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেবেন।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে জেলার পাঁচটি উপজেলায় নয় হাজার নয়শ ৭০টি পানিবন্দি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী শুকনো খাবার, চাল ও নগদ অর্থ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। পানিবন্দি প্রতিটি পরিবার যাতে সহায়তা পায় সেদিকে নজর রাখা হয়েছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজবাড়ী সদরের গোপালবাড়ি এলাকার তারাই ব্যাপারী ও হাকিম বিশ্বাসের বাড়ি সংলগ্ন রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ পানি জোয়ারের কারণে এলাকায় পানি প্রবেশ করতে থাকে। এতে করে এলাকাবাসীর মধ্যে বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্ক দেখা দেয়। বিষয়টি জানার পর থেকে ভাঙন রোধে বালু ভর্তি সাড়ে ৪ শত জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। একইসঙ্গে স্থানীয়দেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে ১৩০ মেট্রিকটন চাল, নগদ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, শিশু খাদ্য বাবাদ ২ লাখ টাকা এবং গবাদিপশুর খাদ্য বাবদ আরও ২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
সিবি/ওআ