ন্যাভিগেশন মেনু

করোনাকালে প্রয়োজন মানসিক প্রশান্তি


শাওন সরকার

আজ সকালে উঠতেই একটা শূণ্যতা অনুভব করলাম। বরাবরই একা থাকতে অভ্যস্ত আমি।তারপর কর্মজীবনে জড়িয়ে প্রিয় কলকাতাকে ছেড়ে আহমেদাবাদ, ভোপাল, দিল্লি গিয়ে থাকতে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে বাবা-মা বা দিদি আমার কাছে আসে। বা আমিও কলকাতা কালভদ্রে যাই বটে।

কিন্তু জীবনের প্রয়োজনে ফিরে আসতে বাঁধ্য হই কর্মস্থলে।সেই ছোটবেলা থেকে বরাবরই নিজের ভূবনে বিচরণ করতে ভালবাসি আমি। তদুপরি প্রাইভেসির কারণে একাই থাকতে অভ্যস্ত আমি। কিন্তু এই একাকীত্বের কারণে ইদানীং শূণ্যতা যেন আমায় আজকাল বড্ড গ্রাস করে ফেলছে। আর এই শূণ্যতা যেন "করোনার  করুণা"।

বিশ্বজুড়ে অতিমারি কোভিড-১৯-এ এ পর্যন্ত (৫ জুন, ২০২১) বলি হয়েছেন ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ১৯০ জন । আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ১১ হাজার ৮০১ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার জন।

অর্থাৎ বলাইবাহুল্য বহু লোক এই অতিমারির "হিংস্রতার" শিকার হয়েছেন। প্রায় সবাই নানা দু:খ-দুর্দশায় নিপতিত হয়েছেন। বিশ্বজুড়েই সাধারণ মানুষের জীবনযাপন অচল হয়ে পড়েছে। করোনার তীব্র বেগ থামিয়ে দিয়েছে আমাদের অগ্রগতিকে। এগিয়ে চলার পথকে করেছে রুদ্ধ। বলাবাহুল্য প্রায় সবাই আমরা কমবেশি করোনার শিকার।

এ পর্যন্ত (১২ জুলাই অবধি)বিশ্বে এ পর্যন্ত ৪০ লাখ ৫৫ হাজার ৬৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ কোটি ৮০ লাখ ৫৭ ১৯৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৭ কোটি ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৬৮ জন। 

খাদ্যের ঘাটতি, বেকারত্ব, গণপরিবহনের অভাব, মানুষের জীবন ঘরে এবং বাইরে উভয় জায়গাতে দুর্বিষহ করে তুলেছে। দুশ্চিন্তা এবং অবসাদ মানুষকে বেঁধে দিয়েছে এক অলংঘনীয় শিকলে।

আপনজন থেকে হাজারো মাইল দূরে, জীবনের অনিশ্চয়তা মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার সৃষ্টি  করেছে। কিন্তু আমাদের সাহসের সঙ্গে এই বাঁধা পেরোতেই হবে। নইলে শিকলে বাঁধা পড়ে যাব। জীবন থেমে যাবার উপক্রম হবে। রুদ্ধ হয়ে যাবে এগিয়ে চলার পথ।

কোভিড রুখতে সামাজিক দূরত্ব বাড়ালেও আমাদের মানসিক দূরত্ব অবশ্যই কমাতে হবে। একে অপরের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। আপনজনের সাথে কথাবার্তা, পরস্পরের পাশে থাকা, মানসিক সাহায্য করা, আত্মনির্ভরতা এই মহামারিকে পরাস্ত করার মূল চাবিকাঠি।

আমরা জানিনা এই যুদ্ধ কতদিন চলবে। অতএব আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে চলতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় আমাদের করতেই হবে। কেননা এরআগে আমরা বহু রোগ-ব্যাধির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়েছি।

তবে সুখের কথা- করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্ব আজ  এক কাতারে সামিল হয়েছে।যে দেশে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বা টিকা আবিষ্কার করেছে, তা অন্য দেশকে দিয়ে সহায়তা করছে। এভাবেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে করোনার বিরুদ্ধে এক মহাযুদ্ধে নেমেছি এবং আমরা জয়ী হবোই।   

এস এস